ত্রয়োদশ আইপিএলের ফাইনাল ঘিরে দারুণ উন্মাদনা দেখা যাচ্ছে ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে। করোনাকালে দমবন্ধ করা পরিস্থিতি থেকে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে ক্রোড়পতি লিগের ধুন্ধুমার লড়াই। ৫২ দিন ধরে তা উপভোগ করেছেন আট থেকে আশি। সংক্রমণ ঠেকাতে খেলা হয়েছে দর্শকশূন্য মাঠে। তাই দুধের সাধ ঘোলে মেটাতে টিভি’র সামনেই সমর্থকরা গলা ফাটিয়েছেন প্রিয় দলের সমর্থনে। অবশেষে ফাইনালে আজ মুখোমুখি মুম্বই এবং দিল্লী।
খেতাবের সংখ্যা চার থেকে পাঁচে কি নিয়ে যেতে পারবে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স? নাকি প্রথমবার ফাইনালে উঠেই বাজিমাত করবে দিল্লী ক্যাপিটালস? দু’টি প্রশ্নের উত্তর পেতেই আজ মঙ্গলবার গোটা ক্রিকেট দুনিয়ার চোখ থাকবে দুবাই ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।
আইপিএলের মঞ্চে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে দিল্লীর সাফল্য একেবারেই পাতে দেওয়ার মতো নয়। সেই মিথ ভেঙে ট্রফি জেতাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ শ্রেয়াসদের সামনে। দারুণ ফর্মে আছেন ওপেনার শিখর ধাওয়ান। তাঁর সঙ্গে এই ম্যাচেও হয়তো ওপেন করবেন স্টোইনিস। এই অজি অলরাউন্ডারটি অনেক হিসেব উল্টে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। তবে ক্যাপ্টেন শ্রেয়াস আয়ার নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছেন না। তাঁর মনে রাখা উচিত, খেতাব জয়ের এমন সুযোগ বারবার আসবে না। সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে ঋষভ পন্থেরও। অস্ট্রেলিয়া উড়ে যাওয়ার আগে মনোবল বাড়িয়ে নেওয়ার এটাই সেরা সুযোগ তাঁর সামনে। শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়লে তা সামাল দেওয়ার দায়িত্ব অজিঙ্কা রাহানের। হেটমায়ারের মারমুখী ব্যাটিং মুম্বইয়ের যাবতীয় পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে পারে।
ক্রিকেট অবশ্যই ক্যাপ্টেন গেমস। তবে দুই দলের কোচ মুম্বইয়ের জয়বর্ধনে ও দিল্লীর পন্টিংয়ের ক্ষুরধার মস্তিষ্ক এই ম্যাচে বাড়তি বারুদ জোগাচ্ছে।
লড়াইয়ে সব দিক থেকেই এগিয়ে রোহিত শর্মার মুম্বই। কিন্তু ক্রিকেট যে অনিশ্চয়তার খেলা, ফরম্যাট যখন টি-২০, তখন অনেক কিছুই ঘটতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মুম্বইকে এগিয়ে রাখলেও দিল্লীর সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। মুম্বইয়ের সবচেয়ে বড় শক্তি দলগত সংহতি। ক্রিকেটারদের মধ্যে বোঝাপড়া খুবই ভালো। তার কারণ, চারবারের চ্যাম্পিয়নরা কোর গ্রুপে খুব বেশি কাটাছেঁড়া করেনি। মুম্বইয়ের ব্যাটিংয়ে বড় ভরসা অবশ্য অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ফর্মে থাকলে তিনি একাই ম্যাচ বের করে দিতে পারেন। কিন্তু চোটের পর হিটম্যানকে তেমন ছন্দে পাওয়া যাচ্ছে না। সেই খামতি ঢেকে দিতে সফল কুইন্টন ডি’কক, ঈশান কিষাণরা। তিন নম্বরে সূর্যকুমার যাদব দুর্দান্ত সার্ভিস দিচ্ছেন। মিডল অর্ডারে পান্ডিয়া ব্রাদার্সের (হার্দিক ও ক্রুনাল) সঙ্গে কিয়েরন পোলার্ডও দারুণ কার্যকরী।
‘ব্যাটল অব পেস’ দেখার সুযোগ পাবেন ক্রিকেটা অনুরাগীরা। কারণ, দুই দলের পেস বিভাগ খুবই শক্তিশালী। মুম্বইয়ের যেমন রয়েছেন ট্রেন্ট বোল্ট, যশপ্রীত বুমরাহর মতো তারকা। ঠিক তেমনই দিল্লিকে নিয়মিত ভরসা জোগাচ্ছেন রাবাডা-নর্টজে জুটি। দুবাইয়ের পিচে পেসাররা সুবিধা পাচ্ছেন। তাই মনে করা হচ্ছে, ম্যাচের চাবিকাঠি থাকবে পেসারদের হাতেই। প্রতিটি ম্যাচেই কম-বেশি স্পিনারদের ভূমিকা গুরুত্ব মনে হয়েছে। সেদিক থেকে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও অক্ষর প্যাটেলের অভিজ্ঞতাও কাজে লাগাতে চাইছে দিল্লি। মুম্বই আস্থা দেখাচ্ছে রাহুল চাহার ও ক্রুনাল পান্ডিয়ার উপর।