দেশের মধ্যে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিতে চলা রেলওয়ে জোনগুলোর অন্যতম পূর্ব রেল। ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরের হিসেব বলছে, পূর্ব রেলের অপারেটিং রেশিও ১৮৮। অর্থাৎ, প্রতি ১০০ টাকা রোজগার করতে সংস্থাকে খরচ করতে হয় ১৮৮ টাকা! পূর্ব রেলের এই মুমূর্ষু অর্থনৈতিক পরিকাঠামোয় খাঁড়ার ঘা দিয়েছে করোনাভাইরাস।
২৩২ দিন পরিষেবা বন্ধ রাখার ফলে টিকিট বিক্রি না-হওয়ায় পূর্ব রেলের ক্ষতি হয়েছে ১৪০০ কোটি টাকা। এই ক্ষতি মূলত লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকার জন্যই। শিয়ালদহ ডিভিশনের সাবার্বন শাখায় প্রায় ৯০ লক্ষ মান্থলি টিকিট কাটা হয়। হাওড়া ডিভিশনের সাবার্বন শাখায় মান্থলি টিকিটের সেই সংখ্যা ৪৫ লক্ষর কাছাকাছি। দৈনিক টিকিট বিক্রি তো আছেই।
তবে প্রায় আট মাস যাবৎ লোকাল ট্রেনের পরিষেবা বন্ধ থাকার ফলে টিকিট বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ। লকডাউন পরিস্থিতিতে পূর্ব রেলের পণ্য পরিবহণ অবশ্য কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু পুরোপুরি যাত্রী পরিবহণের উপর নির্ভরশীল পূর্ব রেলের দুমড়ে যাওয়া মেরুদণ্ড সোজা করতে যে পরিমাণ পণ্য পরিবহণ প্রয়োজন, সেই পরিমাণ ব্যবসার যে কোনও সম্ভাবনা নেই, সেটা সংস্থার কর্তারা বিলক্ষণ জানেন।
ইস্টার্ন রেলওয়ে মেন্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ বলছেন, ‘বহু বছর রেলের ভাড়া বাড়ে না। ৫ টাকার টিকিটে ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত যাওয়া যায়। এই ব্যবস্থা না-বদলালে আগামী দিনে বড় বিপদ। রেল এমনিতেই ক্ষতিতে চলছিল, কিন্তু করোনাভাইরাস এসে কফিনে শেষ পেরেক মেরে দিল।’