গাড়ি নয়, সাধারণ মানুষের পালস বুঝে নিতে, তাঁদের অভাব-অভিযোগ শুনতে পায়ে হেঁটেই গোটা বক্সা পাহাড় কার্যত চষে বেড়ালেন আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মীনা। প্রায় আট কিলোমিটার পাহাড়ি পথ বেয়ে শনিবার ছুটির দিনে ২৬০০ ফুট উঁচু বক্সা পাহাড়ের ছ’টি গ্রাম পরিদর্শন করলেন তিনি।
স্পোর্টস শু, দুধ সাদা টি শার্ট ও ট্র্যাকস্যুট পড়ে পিঠে ব্যাগ নিয়ে পাহাড়ের চড়াই উতরাই ভেঙে তড়তড় করে জেলাশাসককে পাহাড় ডিঙিয়ে যেতে দেখে অবাক হলেন অনেকেই। জেলাশাসকের সঙ্গে এদিন জেলা বিদ্যুৎ ও পূর্ত দফতরের আধিকারিকরা ছাড়াও জেলা প্রশাসনের আরও কয়েকজন জেলা স্তরের আধিকারিক পাহাড় বেয়ে এই পরিদর্শনে সামিল হয়েছিলেন। পাহাড়ি মানুষদের অভাব অভিযোগ শুনেছেন তাঁরা। উন্নয়নের কী কী পরিকল্পনা নেওয়া যায় তাও এদিন পাহাড়বাসীর কাছ থেকে সরাসরি শুনেছেন জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মীনা।
তবে প্রশাসনিক এই দলটি এদিন সব থেকে বেশি সময় দিয়েছিলেন ঐতিহাসিক বক্সা ফোর্টের সংস্কার ও সংরক্ষনের কাজ খতিয়ে দেখতে। উল্লেখ্য, ঐতিহাসিক বক্সা ফোর্ট সংস্কারের কাজ শুরু করেছে রাজ্য সরকার। খরচ হচ্ছে প্রায় ৪ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা। এদিন সেই কাজের বিস্তারিত খোঁজখবর নেন জেলাশাসক। তিনি বলেন, ‘‘ঐতিহাসিক বক্সা ফোর্টের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। সেই কাজ দেখতে ফোর্ট পরিদর্শন করেছি। এছাড়া পাহাড়ি গ্রামে মানুষদের সুবিধে অসুবিধের খোঁজ নিয়েছি। গ্রামগুলোর উন্নয়নে কী কী করা যায় তার খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। আরও কিছু রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হবে।’’
প্রসঙ্গত, আলিপুরদুয়ারের সদর বাজার, তাসিগাও, বক্সা ফোর্ট ও পাহাড় চূড়ায় লেপচাখা গ্রামে পায়ে হেঁটেই সদলবলে ঘুরে বেড়িয়েছেন জেলাশাসক। এই দলে ছিলেন রাজাভাতখাওয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ববি লামাও। তিনি বলেন, ‘‘যেভাবে একজন জেলাশাসক পায়ে হেঁটে পাহাড় চষে বেড়িয়েছেন তাতে আমরা অভিভূত। এর আগে কোনও জেলা শাসক এভাবে পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে এখানে আসতে সাহস করেননি।’’