পাহাড়ে বিমল গুরুংয়ের ভোল বদলকে বঙ্গ বিজেপির নেতারা তেমন আমল দিতে না চাইলেও বাংলা সফরে এসে অমিত শাহ বুঝিয়ে গেলেন, বিধানসভা ভোটের আগে গুরুংকে হারানোয় বেশ চাপেই পড়েছেন তাঁরা। শুক্রবার দিল্লী ফেরার আগে শাহকে গুরুং সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করেন সাংবাদিকরা। উত্তরে দু’দিক বজায় রেখেই মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি যেমন বলেছেন, গুরুং আগেও পাহাড়ের জন্য লড়াই করেছেন, এখনও করছেন। তেমনি গুরুংয়ের বিরুদ্ধে যে দেশ বিরোধী মামলাগুলি রয়েছে সেগুলি নিয়ে কোনও ব্যবস্থা কেন নিচ্ছে না রাজ্য সরকার, এই প্রশ্নও তুলেছেন।
রাজনৈতিক মহল বলছে, শাহের কথার অন্তর্নিহিত অর্থ গভীর। কারণ গুরুংয়ের আন্দোলনকে ‘লড়াই’ আখ্যা দিয়ে শাহ বুঝিয়ে দিয়েছেন, ক্ষমতায় এলে তো কথাই নেই, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার যে কোনও সময়ে গোর্খাল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে পারে। গুরুংয়ের আন্দোলনকে প্রচ্ছন্ন সমর্থন করে সে কথাই মনে করিয়ে দিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, গুরুংয়ের বিরুদ্ধে রাজ্যের করা মামলার প্রেক্ষিতে কেন তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না? প্রশ্ন তুলেছেন শাহ। ওয়াকিবহাল মহলের বিশ্লেষণ, এই কথার মধ্যেও রয়েছে যথেষ্ট তাৎপর্য। পাল্টা তাঁদের প্রশ্ন, গুরুং ও সঙ্গী-সাথীদের বিরুদ্ধে এইসব মামলা রয়েছে জানার পরেও কেন কেন্দ্র বারবার তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে? গুরুং নয়ডায় রয়েছে জেনেও কেন তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি?
তৃতীয়ত, গুরুংকে গালমন্দ না করে অমিত শাহ তাকে ফিরে আসার বার্তা দিয়ে রাখলেন। রাজ্যের কেন্দ্রীয় নেতারা না বুঝুন, অমিত শাহ জানেন, এখনও পাহাড়ের অনেকাংশ জুড়ে রয়েছেন গুরুং। যা ভোট রাজনীতিতে মারাত্মক। অর্থাৎ যারা বলছিলেন গুরুং না থাকলেও বিজেপি বিধানসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে জিতবে, তাদেরকে নস্যাৎ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বুঝিয়ে দিলেন, গুরুং এখনও পাহাড়ের মসিহা। আর একুশের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই এক চালেই ক্লিন বোল্ড হয়েছেন মোদী-শাহ জুটি।