গতকাল নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে বাজারদর নিয়ে রীতিমত ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন কেন্দ্রের মানসিকতা ও অত্যবশকীয় পণ্যের আইন সংশোধনের ঘটনাকে। পাশাপাশি জানিয়েছিলেন ওই সংশোধিত আইন যাতে লাগু না হয় তার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেবেন। একই সঙ্গে গতকাল রাতেই পিঁয়াজ মজুত না করার জন্যও প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা বার করে দেয় রাজ্য সরকার। এবার এদিন সকাল থেকেই কলকাতায় শুরু হয়েছে বাজারে বাজারে ইবি বা কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের আধিকারিকদের হানাদারি। লক্ষ্য বাজারদর নিয়ন্ত্রণ।
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকালই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ ও শীর্ষস্তরের প্রশাসনিক কর্তাদের অনুমতি নিয়ে চূড়ান্ত হয়ে যায় এদিনের সকালের অ্যাকশন প্ল্যান। সেই মোতাবেক এদিন সকাল থেকেই টালা থেকে টালিগঞ্জ, বেহালা থেকে মুকুন্দপুর সব বাজারেই চলে ইবি’র হানাদারি। নিউ মার্কেট, গড়িয়াহাট মার্কেট, লেক মার্কেট, হাতিবাগান বাজার, জগুবাবুর বাজার সহ একাধিক এলাকায় চলে এই হানাদারি। কোনও ব্যবসায়ী যাতে রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে মজুতের দিকে না ঝোঁকেন তার জন্য ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দেন এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের আধিকারিকরা৷ পাশাপাশি যাঁরা কোনও রসিদ ছাড়াই কেনাবেচা করছে তাঁদেরও সতর্ক করা হয়৷
পুজোর আগেই রাজ্য সরকার কার্যত দাম বেঁধে দিয়েছিল কোন জিনিস কত দামে বিক্রি হবে। যদিও বাস্তবে দেখা যাচ্ছিল সেই নির্দেশিকা মানছেন না কেউই। রাজ্য আলুর দর ২৭টাকা কেজিতে বেঁধে দিলেও এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৪০টাকা কেজি দরে। পিঁয়াজের দাম ৫০টাকা রাখা হলেও এখন তা কোথাও কোথাও ১০০টাকা কেজি দরেও বিক্রি হচ্ছে। সেই সঙ্গে চড়েছে সবজির দাম। পটল আর টমাট্যো ৮০টাকা কেজি দরে যেমন বিক্রি হচ্ছে তেমনি ঢ্যাঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৬০টাকা কেজি দরে। বড় ফুলকপি কোথাও কোথাও ৮০ টাকা ছুঁয়ে ফেলেছে আর ছোট ফুলকপি তো ৩০ টাকার নীচে কোথাও নেই। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি দরে। এই অবস্থায় কার্যত নাভিশ্বাস উঠেছে আমজনতার। যদিও এত বাজারদর বাড়ার কথা মোতেও নয়। এই অবস্থায় কেন বাজারদর বেড়েছে তা দেখতেই এদিন সকাল থেকে কলকাতার অন্তত ২০টি বাজারে হানা দিলেন কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের আধিকারিকরা।