সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। বিহার ভোটের আগে গতবছর কেন্দ্রের পাশ করানো এই আইনকেই হাতিয়ার করতে চাইছে বিজেপি। সেই লক্ষ্যেই বিহারের প্রচারে গিয়ে সিএএ-র সুখ্যাতি করে এসেছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। সেই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে এসেছিলেন, এবার দেশ থেকে ‘অনুপ্রবেশকারী’দের ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হবে।
এই ‘ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া’র নিদান আবার পছন্দ হয়নি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের। সংখ্যালঘু ভোট পুরোপুরি হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার ভয়ে এবার নাম না করে যোগীকেই পাল্টা দিয়ে দিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। সাফ বলে দিলেন, ‘এভাবে কথা বলা উচিত নয়।’
তৃতীয় দফার ভোটের জন্য বিহারের কাটিহারের এক জনসভায় যোগী বলেন, ‘অনুপ্রবেশ রুখতে দুর্দান্ত একটা সমাধান পেয়ে গিয়েছেন মোদীজি। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানের নিপীড়িত সংখ্যালঘুদের তিনি নিরাপত্তা দিতে চান। সেই সঙ্গে কেন্দ্র ঠিক করে নিয়েছে, যে কোনও অনুপ্রবেশকারী দেশের নিরাপত্তায় চিড় ধরাতে চাইলেই তাঁকে দেশ থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হবে।’ জোটসঙ্গী বিজেপির স্টার প্রচারকের এই মন্তব্যে অস্বস্তিতে পড়ে যান নীতীশ। আসলে বিহারে একটা বড় অঙ্কের সংখ্যালঘু ভোটার আছেন। সিএএ ইস্যুতে এমনিতেই তাঁরা বেশ ক্ষুব্ধ। তার উপর যোগীর এই মন্তব্য তাঁদের ক্ষোভ আরও বাড়াবে। আর সেকারণেই সম্ভবত উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পাল্টা দিতে হল বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে।
যোগীর এই মন্তব্যের পরই এক জনসভায় নীতীশ কুমার বলেন, ‘এসব ফালতু কথা কারা বলে? ফালতু প্রচার কারা করে? এখানে কে কাকে দেশ থেকে বের করবে? আমরা সবাই হিন্দুস্তানি, আমরা সবাই ভারতীয়? কে বের করবে? অকারণে এসব কেন বলেন? আরে আমি তো যখন থেকে সুযোগ পেয়েছি, তখন থেকেই তো শুধু সম্প্রীতি আর ভ্রাতৃত্বের পরিবেশ তৈরি করেছি। আমার লক্ষ্য একটাই, সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে সম্প্রীতি আর ভ্রাতৃত্বের সঙ্গে থাকবে। তাহলেই তো উন্নতি হবে। আসলে কিছু মানুষ চায় নিজেদের মধ্যে এই ঝগড়া চলতে থাকুক। তাহলে কোনও কাজ করতে হবে না।’