করোনা আবহেও বেশ কয়েকটি রাজ্যের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের তেমন সহযোগিতা মিলছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। বাংলা তার মধ্যে অন্যতম। বরাবরের মতো কোভিড পরিস্থিতির সঙ্গে যুঝতেও বাংলার দিকে কেন্দ্র সেভাবে হাত বাড়াচ্ছে না বলে অভিযোগে আবারও সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেসব ছাড়াই বাংলা যেমন কোভিডযুদ্ধে এগিয়ে, তেমনই লকডাউনে কাজ হারানো পরিযায়ী শ্রমিকদেরকর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও বাংলায় অভূতপূর্ব সাফল্য মিলেছে বলে বৃহস্পতিবার নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠকে দাবি করলেন তিনি।
লকডাউনের জন্য ভিনরাজ্য থেকে কাজ হারিয়ে বাংলায় ফেরা শ্রমিকদের নিয়ে গোড়া থেকেই পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীরই পরামর্শ ছিল, রাজ্যেই পরিযায়ী শ্রমিকদের কোনওভাবে সরকারি প্রকল্পগুলিতে কাজ দেওয়া হোক। তাহলে তাঁদের জীবিকা নিয়ে চিন্তা মিটবে। এবং এ ব্যাপারে ১০০দিনের কাজ-সহ একাধিক প্রকল্পে পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজে লাগানোর ব্যাপারে অগ্রাধিকারের নির্দেশ দেন তিনি। পুরুলিয়া জেলাই এ ব্যাপারে সবচেয়ে এগিয়ে ছিল। ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পে গত মে মাসে জেলায় ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজে লাগিয়ে ইতিমধ্যেই সাফল্য পাওয়া গিয়েছে। গত ৫ মাসেই তাঁদের হাতে জমিতে ফলেছে রকমারি সবজি, জমি থেকে তা সরকারি বিপণীগুলিতেও পৌঁছে গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে সেই সাফল্যের কথা তুলে ধরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই কাজে আরও জোর দেওয়া হোক। তাঁর দাবি, ৫ লক্ষ ৪৪ হাজার পরিযায়ী শ্রমিককে কাজ দেওয়া হয়েছে। সাড়ে ৩ লক্ষের বেশি শ্রমিক নতুন করে জব কার্ড পেয়েছেন। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন রাজ্যেই কর্মসংস্থানের পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে। কিন্তু বাংলা তার মাঝেও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে।
প্রাথমিকভাবে মুখ্যমন্ত্রীর পরিকল্পনা ছিল, কাজ হারিয়ে ভিনরাজ্য থেকে যাঁরা ফিরছেন, তাঁদের এখানেই এমনভাবে কর্মসংস্থান করে দেওয়া হবে যাতে আর তাঁরা বাইরের রাজ্যে কাজ করতে চলে না যান। সেইমতোই বিভিন্ন প্রকল্পের পরিযায়ীদের কাজে লাগানোর কাজ চলেছে।
এদিনের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের লড়াইয়ে সাফল্যের কথাও তুলে ধরেন। করোনা সংকটের গোড়া থেকেই এ রাজ্যে রোগীদের চিকিৎসা বিনামূল্যে হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই পরিকাঠামোর আরও উন্নয়ন হয়েছে। এদিন পরিসংখ্যান দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, কেন্দ্রের কোনও সাহায্য ছাড়াই বাংলা করোনাযুদ্ধে অনেকটা এগিয়ে। এখানে সুস্থতার হার ৮৮.৮ শতাংশ। তাঁর দাবি, করোনা রোগীর শনাক্তকরণে আরটি-পিসিআর টেস্ট এ রাজ্যে হচ্ছে, যা অন্য অনেক রাজ্যেই হয় না।