অশান্তির আশঙ্কার মধ্যেই আমেরিকায় চলছে শেষপর্বের ভোটগ্রহণ। মার্কিন সময়মতো আজ সেই বহু প্রতীক্ষিত মঙ্গলবার। আগামী চার বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টকে নির্বাচন করবেন দেশের প্রায় ১৫.৩ কোটি নথিভুক্ত ভোটার। যা মোট ভোটদাতার ৬৫ শতাংশ। ইতিমধ্যেই, করোনা মহামারীর জেরে মেল-ইন-ব্যালট বা ‘আর্লি ভোটিং’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভোটদান করেছেন অনেকেই। আর পরিসংখ্যান বলছে হোয়াইট হাউস দখলের দৌড়ে এগিয়ে ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী জো বাইডেন। তবে মঙ্গলবার ভোটগ্রহণ শেষ হওয়া পর্যন্ত রিপাবলিকান প্রার্থী তথা বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দৌড় থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন তা একেবারেই বলা যায় না।
আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট ভোটে জিততে গেলে নির্বাচকমণ্ডলীর মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হয়। সেখানে কখনও একটি বড় রাজ্য প্রাধান্য বিস্তার করতে পারে না। বরং একাধিক ছোট রাজ্য নির্ণায়ক হয়ে ওঠে। ৫০টি রাজ্যের মধ্যে এখানে এমন কিছু রাজ্য আছে যেগুলি ‘ডেমোক্র্যাট’ বলে পরিচিত। এই রাজ্যগুলি প্রধানত আমেরিকার দুই উপকূলে অবস্থিত। যেমন ক্যালিফোর্নিয়া বা নিউ ইয়র্ক। উপকূলে অভিবাসীদের ভিড়। অভিবাসীরা ঐতিহাসিকভাবে ডেমোক্র্যাট দলের সমর্থক। এইসব রাজ্যে কখনওই দাঁত ফোটাতে পারে না রিপাবলিকানরা। আবার মধ্য আমেরিকায় যেখানে অভিবাসীরা তুলনামূলকভাবে জনসংখ্যার কম অংশ, সেখানে বিপুল শক্তি রিপাবলিকান পার্টির। মধ্য আমেরিকা মূলত কৃষিপ্রধান। এখানকার কৃষিজীবী, রক্ষণশীল শ্বেতাঙ্গরা রিপাবলিকানদের বিশাল ভোটব্যাঙ্ক। এই অঞ্চলে ডেমোক্র্যাটরা দাঁত ফোটাতে পারে না। ফলে ৫০টি রাজ্যের মধ্যে যে রাজ্যগুলি ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে ভাগ হয়ে আছে, সেগুলি বাদ দিয়ে মার্কিন রাজনীতির হিসেবনিকেশ হয়।
ভোটগ্রহণের শেষপর্বে নিউ ইয়র্ক টাইমস-সিয়েনা কলেজের একটি সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে পেনসিলভ্যানিয়া, ফ্লোরিডা, অ্যারিজোনা, উইসকনসিনের মতো ‘সুইং স্টেট’গুলিতে এগিয়ে রয়েছেন বিডেন। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, ২০১৬ সালে এই রাজ্যগুলিতে জয়ী হয়েছিলেন ট্রাম্প। সিএনএন-এর একটি সমীক্ষা বলছে, অ্যারিজোনা, মিশিগান ও নর্থ ক্যারোলিনাতেও রিপাবলিকানদের অবস্থা খুব একটা আশাপ্রদ নয়। ওই রাজ্যগুলিতেও এগিয়ে রয়েছেন ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী জো বাইডেন। গ্রহণযোগ্যতা ও দেশকে সামলানোর বিষয়ে বাইডেনের উপরই বেশি আস্থা রয়েছে জনতার বলে মনে করছেন সমীক্ষকরা।