দুর্গাপুজো ও লক্ষ্মীপুজো কাটতেই এবার নিত্যযাত্রীদের সমস্যার কথা বিবেচনা করে রেলকে চিঠি পাঠালো রাজ্য। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব এইচ কে দ্বিবেদীর লেখা সেই চিঠিতে প্রতিদিন কয়েক জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানোর আর্জি জানিয়ে রেলকে একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পরে, স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে ট্যুইট করে এ খবর জানানো হয়েছে। শনিবার রাজ্যের তরফে পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল এবং বিকেলে হাতে গোনা লোকাল ট্রেন চালানো যেতে পারে।
রেলকে পাঠানো এই চিঠিতে রোজকার যাত্রী ভোগান্তির উল্লেখ করা হয়েছে। চিঠিতে উষ্মা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র রেলকর্মীদের জন্য ট্রেন চলছে। কিন্তু অন্যান্য সরকারি কর্মচারী এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। রাজ্যে গণপরিবহণের ক্ষেত্রে অন্যান্য মাধ্যম চালু হয়ে গিয়েছে। শুরু হয়েছে বিমান পরিষেবাও। কিন্তু রেল শুধুই নিজেদের কর্মীদের জন্য পরিষেবা দিচ্ছে।
শনিবারই হাওড়া স্টেশনে স্পেশ্যাল ট্রেনে ওঠা নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে রেলপুলিশে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধে। ক্ষোভে ফেটে পড়েন যাত্রীরা। রেলপুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জের অভিযোগ ওঠে। শনিবারের ওই ঘটনার প্রেক্ষিতেই রাজ্য সরকার অসন্তোষ ব্যক্ত করে লোকাল ট্রেন পরিষেবা শুরুর বিষয়ে রেলকে চিঠি দেয়। তবে চিঠিতে স্পষ্ট করে বলা আছে, কঠোর ভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই লোকাল ট্রেন চালাতে হবে। তবেই রাজ্য অনুমতি দেবে। চিঠিতে হাওড়া স্টেশনে যাত্রীদের উপরে রেলপুলিশের লাঠিচার্জ এবং সামগ্রিক ভাবে রেলপুলিশের ব্যবহার নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রসচিব লেখেন যে এর আগে মেট্রো চলাচলও যথেষ্ট সতর্কতা ও দক্ষতার সঙ্গে চালু করতে সক্ষম হয়েছে রাজ্য। এ বার রেলের সম্মতি মিললে বিশেষ কয়েক জোড়া ট্রেনও ভালো ভাবেই চলতে পারবে এখানে। তাতে জনসাধারণেরও অনেক সুবিধা হবে। শনিবার রাতে রেলের তরফে চিঠি প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলা হয়েছে, “দু’পক্ষের আলোচনার পরেই লোকাল ট্রেন পরিষেবার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও শনিবার জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে যাত্রী নিয়ন্ত্রণ করে মেট্রো চালানো সম্ভব হয়েছে। সে রকম কোনও ‘মডেল’-এর মাধ্যমে লোকাল ট্রেনও চালু করা যেতে পারে। পূর্ব রেলের জিএম-এর কাছে সেই মর্মে চিঠি দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, লোকাল ট্রেন পরিষেবা শুরুর জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে রেল। বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীদের জন্য বিশেষ গোলাকার চিহ্ন করা হয়েছে। যাতে ট্রেনে ওঠার আগে তাঁরা পরস্পরের থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়াতে পারেন। টিকিট কাউন্টারের সামনে দাঁড়ানোর জন্যেও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।