বিহারে বিধানসভা নির্বাচন চলাকালীন ফের একবার প্রকাশ্যে চলে এল মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং বিজেপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। ক্ষমতায় ফিরলে জনসংখ্যার ভিত্তিতে শিক্ষা এবং চাকরিতে সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বসেছেন নীতিশ। জনগণনার তথ্য হাতে না থাকায় এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করা সম্ভব হচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু ওই মন্তব্যের পর, নীতীশের থেকে দূরত্ব বাড়াচ্ছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ জানিয়ে দিয়েছেন, আইনের আওতাতেই সংরক্ষণ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জনসভায় নির্বাচনী প্রচার সাড়তে গিয়ে গিয়ে নীতীশ কুমার মন্তব্য করেন, ‘চাকরি এবং শিক্ষাক্ষেত্রে আসন সংরক্ষণ নিয়ে কোনও আপত্তি নেই। তবে আমরা চাই জনসংখ্যার ওপর সমানুপাতিকভাবে আসন সংরক্ষণ করা হোক।’ যদিও মুখ্যমন্ত্রী জনগননার তথ্যেও ওপর আসন সংরক্ষণ করা উচিত কিনা সেই বিষয়ে সেই বিষয়ে স্পষ্ট করেননি।
আর এ নিয়েই ভিন্ন বার্তা দিয়েছেন রবিশঙ্কর। তিনি বলেন, ‘সংরক্ষণের বিষয়টি নিয়ে আমাদের অবস্থান খুব স্পষ্ট। সংবিধানে যে সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে তা আমরা সমর্থন করি। কিন্তু বিজেপি শুধু প্রান্তিকদেরই প্রতিশ্রুতি দেয়নি।’ নীতীশের প্রতিশ্রুতির পর, রবিশঙ্করের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনীতি বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
একটা জিনিস স্পষ্ট যে নীতিশ কুমার কেন্দ্রের নীতি মেনে চলতে চাইছেন না। কারণ মোদী সরকার দেশে কাস্ট ভিত্তিক আসন সংরক্ষণের প্রথা তুলে দিতে চাইছে। যা নিয়ে বিরোধীতা করছে অ-বিজেপি দলগুলি। এবার সেই তালিকায় কী নাম উঠতে চলেছে জেডিইউ-র, তা স্পষ্ট নয়। প্রসঙ্গত, দিনকয়েক আগে বিহারে এসে অযোধ্যা মন্দির নিয়ে নীতীশ কুমারকে খোঁচা দিয়েছিলেন মোদী। এমনকী ওইদিন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীও। ফলে তাঁর যে আতে ঘা লেগেছিল তা কিন্তু বোঝাই যাচ্ছে।
এদিকে জেডিইউ এবং বিজেপির মধ্য দুরত্ব সৃষ্টি হওয়ার ফায়দা লুটছে রামবিলাস পুত্র চিরাগ পাসোয়ান। কারণ তিনি চান তাঁর এলজেপির সঙ্গে বিজেপি হাত মিলিয়ে বিহার সরকার গড়ুক। তবে আদপে কী ভবিষ্যত লেখা রয়েছে বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। উল্লেখ্য, প্রথম দফার ভোট শেষ হয়েছে বিহারে। আগামী ৩ নভেম্বর এবং ৭ নভেম্বর বাকি দুই দফা। ১০ নভেম্বর ফলপ্রকাশ।