প্রধান বিচারপতি বোবদের বিজেপি নেতার ছেলের হার্লে ডেভিডসন বাইকে বসা ছবি নিয়ে তুমুল বিতর্ক হয়েছিল। এবার ফের নতুন বিতর্ক। সপ্তাহখানেক আগে মধ্যপ্রদেশ সরকারের বিশেষ চপারে প্রধান বিচারপতির সফর এই নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
মধ্যপ্রদেশের বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের নিয়ে মামলার শুনানি ৪ নভেম্বর প্রধান বিচারপতির এজলাসে হওয়ার কথা। তার আগে মধ্যপ্রদেশ সরকারের এই ‘আতিথেয়তা’ নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে বিতর্ক। সমাজকর্মী প্রশান্ত ভূষণের বক্তব্য, প্রধান বিচারপতির কানহা জাতীয় উদ্যান ভ্রমণ এবং নিজের শহর নাগপুরে যাওয়ার জন্য বিশেষ চপারের বন্দোবস্ত করেছে মধ্যপ্রদেশ সরকার। মধ্যপ্রদেশে বিধায়ক পদ খারিজ-সংক্রান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মামলা এখন প্রধান বিচারপতির এজলাসে বিচারাধীন। মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকারের অস্তিত্ব এই মামলার ওপর নির্ভরশীল। এমন সময়ে শিবরাজ সিং চৌহান সরকারের ‘চপার-আতিথেয়তা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভূষণ।
তবে আইনজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের প্রোটোকল মেনে রাজ্য সরকার আতিথেয়তা করতেই পারে। বিচারপতির থাকা, যাতায়াতের পাশাপাশি নিরাপত্তার বন্দোবস্তও করতে পারবে রাজ্য সরকার। এ নিয়ে বিতর্কের কোনও অবকাশ নেই।
প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে জেড প্লাস সুরক্ষা পান। সেইমতোই তাঁর সফরে নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়। এ–ক্ষেত্রে দ্রুত সফরের জন্য চপার ব্যবহার করা হয়েছে বলে খবর। সূত্রের দাবি, যদি প্রধান বিচারপতি সরকারি গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন, তবে চপারই বা কেন পাবেন না? মধ্যপ্রদেশ সরকারের বিশেষ চপারে সফর নিয়ে বিতর্কের ব্যাপারে অবশ্য বলা হচ্ছে, কয়েক মাস আগেই প্রধান বিচারপতি শিরডি থেকে শনি শিংনাপুর গিয়েছিলেন এবং সেখান থেকে নাগপুরে চপারেই সফর করেছিলেন। চপারের বন্দোবস্ত করেছিল মহারাষ্ট্র সরকার। কাজেই চপারে সফর নিয়ে অহেতুক বিতর্ক করা হচ্ছে বলে সূত্রের দাবি।
প্রসঙ্গত, বিচার-ব্যবস্থার প্রতি সম্মান ও স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচারের স্বার্থে নিরপেক্ষ প্রশাসন অপরিহার্য। সেই লক্ষ্যে বিচারপতিদের জন্য ১৯৯৭ সালের ৭ মে ‘বিচারিক জীবনের মূল্যবোধের পুনরুদ্ধারে’ ১৬ কোডের গাইডলাইন তৈরি করে সুপ্রিম কোর্ট। তারই ১০ নম্বর কোডে বলা হয়, একজন বিচারক তাঁর পরিবার, ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব ব্যতীত উপহার, আতিথেয়তা গ্রহণ করবেন না।