মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে অনিশ্চয়তা এবং বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান কোভিড সংক্রমণের ঘটনায় বড় ধাক্কা খেল লগ্নিকারীদের ভাবাবেগ। এই পরিস্থিতিতে লাভের অঙ্ক ঘরে তুলে নিতে তাঁদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে। আর প্রবল বিক্রির চাপে ভারতে লক্ষ্মীপুজোর দিনই পিছলে গেল শেয়ার সূচক। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত এক সময় ৫০০ পয়েন্টের বেশি হ্রাস পায় সেনসেক্স। অন্যদিকে, ১১,৫৫০ পয়েন্টের নীচে নেমে এসেছে নিফটি।
বৃদ্ধিকে সঙ্গি করে এদিন বাজার খুললেও তা ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ইনফোসিস, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্ক, হিন্দুস্তান ইউনিলিভার এবং ভারতী এয়ারটেলের মতো হেভিওয়েট সংস্থার শেয়ার বিক্রির প্রবণতা গিয়েছে। এক সময় আগের দিনের থেকে ৫০৮ পড়ে যায় সেনসেক্স। অন্যদিকে, নিফটি ৫০ সূচক নেমে আসে গুরুত্বপূর্ণ ১১,৫৫০ পয়েন্টের নীচে।
দুপুর ১টা নাগাদ সেনসেক্স ৪০৮ পয়েন্ট হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছিল ৩৯,৩৪৪ পয়েন্ট। অন্যদিকে, ১১০ পয়েন্ট নীচে নেমে গিয়েছে নিফটি৫০। তখন সূচকের অবস্থান ছিল ১১,৫৬১ পয়েন্ট। পরে সূচকে উন্নতির রেখা দেখা গিয়েছে। দুপুর ২টো নাগাদ সেনসেক্স ২০৩.২১ পয়েন্ট বা ০.৫১ শতাংশ কমে সূচক দাঁড়িয়ে ছিল ৩৯,৫৪৬.৪৬ পয়েন্ট। অন্যদিকে নিফটি ছিল ১১,৬২৭.১০ পয়েন্ট। যা ০.৩৭ শতাংশ বা ৪৩.৭০ পয়েন্ট কম।
দুপুর পর্যন্ত ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের ১১টি ক্ষেত্রগত সূচকের মধ্যে রিয়েল এস্টেট ছাড়া প্রতিটিতেই শেয়ার বিক্রির চাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এর মধ্যে সবথেকে বেশি প্রভাবিত হয়েছে নিফটি প্রাইভেট ব্যাঙ্ক সূচক। এছাড়া নিফটি ব্যাঙ্ক, অটো, পরিষেবা ক্ষেত্র, এফএমসিজি এবং পিএসইউ ব্যাঙ্ক সূচকও নিম্নমুখী।
নিফটিতে সূচকে সবথেকে বেশি শেয়ারের দর পড়েছে ভারতী এয়ারটেলের। এছাড়া বাজাজ ফাইন্যান্স, মারুতি সুজুকি, হিরো মোটোকর্প, কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্ক, হিন্দুস্তান ইউনিলিভার, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, ইনফোসিস, বাজাজ ফিনসার্ভ, সুপলা এবং অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের মতো সংস্থার শেয়ারের দরও নিম্নমুখী।
আগামী ৩ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এই ভোটে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবারও লড়াইয়ের ময়দানে। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন। মার্কিন জনতা আগামী প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাকে বেছে নেবেন তা নিয়ে সংশয়ী বিভিন্ন মহল। অন্যদিকে, কোভিড সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত আমেরিকা এবং ইউরোপের একাধিক দেশ। এই দুই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড়িয়ে নতুন করে অর্থ ঢালার পরিবর্তে লগ্নিকারীরা তাদের শেয়ার বিক্রি করে লাভ ঘরে তুলতে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।