এ যেন কেঁচো খুঁড়তে কেউটে! তদন্ত চলছিল গরু পাচার চক্র নিয়ে। আর সেই তদন্তেই বিএসএফ-কর্তাদের দুর্নীতির যোগসূত্রের প্রমাণ হাতে পেল সিবিআই। পাচারকারীদের সঙ্গে বিএসএফের যোগাযোগ ও আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য তদন্তকারীরা হাতে পেয়েছেন। কর্তাদের থেকে এমন বিপুল সম্পদ সংগ্রহের ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। না এলে পাচারের টাকাতেই যে তাঁদের সম্পত্তি বৃদ্ধি হয়েছে তা ধরে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে চান সিবিআই তদন্তকারীরা।
সংস্থা সূত্রের খবর, সম্প্রতি গরু পাচারের মামলায় বিএসএফের কমান্ডান্ট সতীশ কুমারের নামে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। পাচারে তাঁর ভূমিকা খতিয়ে দেখতে গিয়ে সিবিআই জেনেছে, সতীশ কুমারের দ্বিতীয় স্ত্রীর বাবা ২০১৬ সালে সেপ্টেম্বরে আয় ও সম্পত্তি ঘোষণা প্রকল্পে ১২ কোটি টাকা রোজগারের কথা জানিয়েছিলেন। সে বছর ৮ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নোটবন্দী ঘোষণা করেছিলেন। তার আগে আয়কর দফতর জুনে ইনকাম ডিসক্লোজার স্কিম নিয়ে এসেছিল।
সিবিআই জানাচ্ছে, ওই সময় বিএসএফ-কর্তা সতীশ কুমারের শ্বশুরমশাইও ১২ কোটি টাকা আয়ের কথা জানিয়ে আয়কর দিতে চেয়েছিলেন। ওই ব্যক্তি রির্জাভ ব্যাঙ্ক থেকে ২০০৬ সালে অবসর নিয়েছিলেন। তার ১০ বছর পর কী ভাবে ১২ কোটি টাকা জমা হল তা দেখে আয়কর কর্তাদের সন্দেহ হয়। তাঁকে নোটিস দিয়ে ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়েছিল।
সে সময় এক হিসাবরক্ষক আয়করের ঝামেলা সামলে দিয়েছিলেন। ঘোষিত সম্পত্তির ওপর কর দিয়ে তা ‘সাদা’ করে নেওয়া হয়েছিল। ঘটনাচক্রে বিএসএফ- কর্তার সেই হিসাব পরীক্ষক আর কেউ নন, গরু পাচারে অন্যতম অভিযুক্তের তহবিল ও হিসাবও তিনিই সামলান বলে তদন্তকারীর জেনেছেন। গরু পাচারের জমা হওয়া ঘুষই যে বিএসএফ-কর্তার আত্মীয়ের অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছিল তা এক প্রকার নিশ্চিত সিবিআই। তাই আয়কর আইনে ছাড় মিললেও পাচারের পরিপ্রেক্ষিতে ফের ওই টাকার উৎস জানতে চেয়েছেন তদন্তকারীরা।