লকডাউনের আগে অবধি স্কুলে গিয়েছে। বাবাকে হারিয়েছিল সেই ছোটবেলায়। কিন্তু এত দিন সেই অভাবের সংসারে একটুও কষ্ট বুঝতে দেননি মা। একার রোজগারেই সংসার চালিয়ে গিয়েছেন। তার বা বোনেদের লেখাপড়াতেও কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি সমস্তকিছু বদলে দিয়েছে। লকডাউনের শুরু থেকে কাজ নেই মায়ের। সংসারে কোনও উপার্জনও নেই। মায়ের এমন অসহায়তার দিনে নিজের কাঁধেই সংসারের দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছে ১৪ বছরের সুভান। নিজের লেখাপড়া আপাতত বন্ধ রেখে তাঁর এখন একটাই লক্ষ্য, বোনেদের অনলাইন ক্লাস যেন চালু থাকে।
মুম্বইয়ের ভেন্ডি বাজার এলাকায় এখন চা বিক্রি করে ১৪ বছরের সুভান। না, নিজের কোনও দোকান নেই। রাস্তার ধারেই চা তৈরি করে নেয়। এর পর তা ঘুরে ঘুরে বিক্রি। এই ভাবেই মা, বোন তথা গোটা সংসারের দায়িত্ব সামলাচ্ছে একাই। জানা গিয়েছে, ১২ বছর আগে সুভানের বাবার মৃত্যু হয়। এর পরে মা একটি স্কুল বাসে কাজ নেন। তা থেকে যা রোজগার হত তাতেই কোনও ভাবে চলে যাচ্ছিল সংসার। কিন্তু সেই মার্চ মাস থেকে বন্ধ স্কুল। বন্ধ স্কুল বাস। বন্ধ রোজগার।
লকডাউনের মধ্যেই পরিবারে আর্থিক কষ্ট শুরু হয়ে যায়। তখনই চা বিক্রি করবে বলে ঠিক করে নেয় সুভান। এখন মুম্বইয়ের ভেন্ডি বাজার এলাকায় চা বিক্রি করে রোজ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা আয় হয় তাঁর। সুভান জানিয়েছে, কিছুটা টাকা জমিয়ে রেখে বাকিটা মায়ের হাতে দিয়ে দেয় সে। এখন বোনেদের অনলাইন ক্লাস হচ্ছে। সেটা যাতে ঠিক মতো হয় সে দিকেও কড়া নজর তাঁর। নিজের লেখাপড়া আপাতত বন্ধ। তবে স্কুল খুললে আবার শুরু করার ইচ্ছাও আছে।