রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শিল্পে বিনিয়োগ এবং শিল্পের উন্নতি নিয়ে সচেষ্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ পর পর দু’দফায় প্রায় এক দশকের শাসনে তাঁর ঐকান্তিক চেষ্টা যেমন রাজ্যের ধুঁকতে থাকা শিল্পক্ষেত্রগুলিতে নয়া প্রাণ সঞ্চার করেছে, তেমনি গড়ে উঠছে নানা শিল্পতালুকও। ব্যবসা ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরও উদ্যোগ-বান্ধব পরিস্থিতি তৈরিতে দ্বিতীয় দফার শাসনের শেষ বেলায় আরও কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ করল তাঁর সরকার। লাইসেন্স, অনুমোদন, নামপত্তন থেকে সরকারি ছাড়পত্রের পুনর্নবীকরণ আরও সহজ করতে অনলাইনে এক জানলা ব্যবস্থা আরও বিস্তৃত করছে সরকার। এ জন্য জরুরি প্রশাসনিক সংস্কারের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে।
নতুন ব্যবসা শুরু করতে চেয়ে পুরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স জোগাড়ে অনেকেই সমস্যায় পড়েন। কারখানার জমির মিউটেশন করাতে বা নিকাশি বা পানীয় জলের সংযোগ পেতেও বেগ পেতে হয়। এ বার থেকে ঘরে বসেই বিনিয়োগকারীরা যাতে এই সব সুবিধা পেতে পারেন, সেই লক্ষ্যেই আমূল প্রশাসনিক সংস্কারের পথে হাঁটছে রাজ্য সরকার। যাতে শিল্পস্থাপন কিংবা ব্যবসা শুরুর ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা কাটে এবং গোটা প্রক্রিয়া সরল হয়, রাজ্যকে বিনিয়োগকারীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা যায়। ২০২০-‘২১ অর্থবর্ষেই ‘ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস’ নীতিতে বেশ কিছু নতুন পরিষেবা যুক্ত করছে সরকার।
নবান্ন সূত্রের খবর, আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রতিটি দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। প্রত্যেক দপ্তরে চার-পাঁচ জন অফিসারকে নিয়ে ‘প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ইউনিট’ গড়তে বলা হয়েছে। তারাই সমস্ত বিষয় দেখভাল করবে। শিল্পের জমির মিউটেশন এবং রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া এক সূত্রে বাঁধার মতো অভিনব পদক্ষেপও করেছে সরকার। জমি রেজিস্ট্রেশনের পর মিউটেশনের জন্য আর আলাদা আবেদন করতে হবে না। রেজিস্ট্রেশনের তথ্য চলে যাবে মিউটেশন কর্তৃপক্ষের কাছে। শুরু হয়ে যাবে মিউটেশন প্রক্রিয়া। এসএমএস বা মেলেই জেনে যাবেন জমির বর্তমান এবং আগের মালিক।
শুধু তাই নয়। ট্রেড লাইসেন্সের জন্যও একটি মাত্র আবেদনপত্র পূরণ করে অনলাইনে জমা দিলেই হবে। পুনর্নবীকরণও হবে একই ভাবে। বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং লাগানো, সিনেমার শুটিং থেকে মোবাইল টাওয়ার বসানো, নির্মাণ সামগ্রী মজুত রাখা এবং জলের সংযোগ নেওয়াও অনলাইনে আবেদনেই হয়ে যাবে। রাজ্য সরকারের ‘শিল্পসাথী’ সিঙ্গল উইন্ডো সিস্টেমেই মিলবে সব পরিষেবা। এই অভিন্ন অনলাইন ব্যবস্থার মাধ্যমেই পুরসভা থেকে নির্মাণের নকশা অনুমোদন, কমপ্লিশন সার্টিফিকেট-সহ যাবতীয় ছাড়পত্র পাবেন বিনিয়োগকারীরা।