গত এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে বিজেপি নিজের সব থেকে পুরোনো দুটি সঙ্গী হারিয়েছে। মতাদর্শগত ভাবে একই পথে চলা শিরোমণি অকালি দল এবং শিবসেনা বিজেপির হাত ছেড়ে দিয়েছে। এই আবহে নীতীশ কুমারও বিজেপিকে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ২০১৯ সালের ঝাড়খণ্ড নির্বাচনে একা লড়েছিলেন। তবে বিহার নির্বাচনে নীতীশকেই এনডিএ মুখ বানানো হয়েছে রাজ্যে। কিন্তু তাতেও সমস্যা তৈরি করেছে আরও এক এনডিএ শরিক, এলজেপি।
সম্প্রতি এলজেপি প্রধান চিরাগ পাসোয়ান দাবি করেন, নির্বাচন শেষ হতেই আরজেডির সঙ্গে হাত মেলাবেন নীতীশ। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে সেটাই করেছিলেন নীতীশ। তবে তা ছিল প্রাক্ নির্বাচনী জোট। এদিকে এলজেপি আগেই এনডিএ থেকে বাদ পড়েছে আসন সমঝোতাতে না আসতে পারায়। তাছাড়া চিরাগের নীতীশ বিরোধিতা ক্রমেই অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল এনডিএর জন্য। তবে এলজেপি কিন্তু এখনও কেন্দ্রে এনডিএ শরিক।
তবে যা পরিস্থিতি তাতে হয়ত, বিহারের সব সঙ্গী নিয়ে কেন্দ্রের জোট অটুট রাখা সম্ভব হবে না। বিজেপির বারংবার হুঁশিয়ারির পরও এলজেপি প্রধান চিরাগ প্রতিনিয়ত মোদীর নামে ভোট চেয়েছেন। এদিকে প্রধানমন্ত্রী মোদী এলজেপির নাম না করেই এনডিএ জোট থেকে চিরাগের বিদায়ের ইঙ্গিত দিয়েছেন। সেই ক্ষেত্রে বিহারের রাজনৈতির আঙিনায় এখন চূড়ান্ত বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
বিজেপি প্রায় সব রাজ্যেই সাম্প্রতিক কালে একলা চলো নীতিতে এগিয়েছে। তবে বিহারে সেই নীতিতে তারা এগোতে চায় না। শুধু তাই নয়, এনডিএ জোট সরকাগ গঠন করলে নীতীশই যে মুখ্যমন্ত্রী হবেন, তা স্পষ্ট করে জনিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংখ্যা যাই হোক, বিজেপি বেশি আসন পেলেও জোটের মুখ্যমন্ত্রী হবেন নীতীশ। এতটা দিল দরিয়া হওয়ার মূল কারণ জোট টিকিয়ে রাখা?
তবে এলজেপির জেরেই বিহারে বিজেপি-জেডিইউ জোটে চিড় ধরেছে। জেডিইউর একাংশের মতে, চিরাগ পাসোয়ান আদতে বিজেপির সাহায্যেই নীতীশকে আক্রমণ শানিয়ে চলেছেন। এর জেরে নির্বাচনের ফল আশাব্যঞ্জক না হলে জেডিইউ-বিজেপি বন্ধুত্ব ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এই বিষয়ে অবশ্য জেপি নাড্ডার স্পষ্ট বক্তব্য, বিহারে এনডিএ জোটে রয়েছে বিজেপি, জেডিইউ, ভিআইপি ও হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চা। লোক জনশক্তি পার্টি এনডিএ-র শরিক নয়। তবে কেন্দ্রে এলজেপিকে সঙ্গে নিয়েই পথ চলা সম্ভব কি না, তা নিয়ে এখনই কিছু বলতে নারাজ নাড্ডা।