কোনও নেতার জনপ্রিয়তা কতটা বুঝতে একটা সময় জনমানসে তাঁর প্রভাব, জনসভায় ভিড় টানার ক্ষমতা বা ভোটের ময়দানে তাঁর সাফল্যকে পরিমাপক হিসেবে ব্যবহার করা হত। কিন্তু এখন যুগ বদলেছে। আমরা প্রবেশ করেছি ভার্চুয়াল জগতে। আর এই ভার্চুয়াল জগতে সোশ্যাল মিডিয়ার জনপ্রিয়তাও একটা বড় ভূমিকা পালন করে কোনও নেতার জনমানসে প্রভাব পরিমাপ করার ক্ষেত্রে। আর বিহারের ক্ষেত্রে তথ্য খতিয়ে দেখা যাচ্ছে, এই ভোটের মরশুমে অন্তত ফেসবুকে জনপ্রিয়তার নিরিখে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে ৯ গোল দিচ্ছেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব।
বিহারের প্রথম দফা ভোটের দিনই এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ভোটের মরশুমে নীতীশ কুমার এবং তেজস্বী যাদবের ফেসবুকের জনপ্রিয়তা সংক্রান্ত একটি তথ্য প্রকাশ করেছে। যাতে দেখা যাচ্ছে ভোটের দিন ঘোষণা থেকে প্রথম দফার নির্বাচন পর্যন্ত তেজস্বী যাদব নীতীশ কুমারের ৯ গুণ বেশি ফেসবুক ‘লাইক’ পেয়েছেন। অর্থাৎ তেজস্বীর বিভিন্ন রাজনৈতিক পোস্টকে নীতীশের ৯ গুণ বেশি মানুষ পছন্দ করেছেন। পরিসংখ্যান বলছে, ফেসবুকে নীতীশ এবং তেজস্বী দু’জনের ফলোয়ার সংখ্যাই ১৫ লক্ষের কাছাকাছি। কিন্তু ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকেই তেজস্বী জনপ্রিয়তাতে নীতীশকে অনেকটা ছাপিয়ে গিয়েছেন।
২৫ সেপ্টম্বর ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত এই সময়কালে নীতীশ কুমার ফেসবুকে ৬৭টি রাজনৈতিক পোস্ট করেছেন। যাতে মোট রিঅ্যাকশন সংখ্যা কমবেশি ৩ লক্ষ ৭০ হাজার। প্রতিটি পোস্টে গড়ে ৫ হাজার ৫৭২টি করে রিঅ্যাকশন পেয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে বিরোধী নেতা তেজস্বী যাদব এই সময়কালে মোট ৯৪টি রাজনৈতিক পোস্ট করেছেন। এবং তাতে রিঅ্যাকশন পড়েছে প্রায় ৪৭ লক্ষ। অর্থাৎ তেজস্বীর প্রতিটি পোস্টে রিঅ্যাকশন সংখ্যা প্রায় ৫১ হাজার। যা কিনা নীতীশ কুমারের ৯ গুণ। শুধু তাই নয়, অ্যাংরি রিঅ্যাক্টের ক্ষেত্রেও মুখ্যমন্ত্রীকে টেক্কা দিয়েছেন বিরোধী নেতা। তথ্য বলছে, তেজস্বীর পোস্টের মোট রিঅ্যাকশনের ৩.৫ শতাংশ লাভ রিঅ্যাক্ট, আর অ্যাংরি অর্থাৎ রাগের রিঅ্যাকশন মাত্র ০.০৪ শতাংশ। নীতীশ আবার অ্যাংরি রিঅ্যাকশন পেয়েছেন প্রায় ১.৬৫ শতাংশ। অর্থাৎ তেজস্বীর পোস্টের থেকে প্রায় ৪০ গুণ বেশি মানুষ নীতীশের পোস্টে রাগ দেখাচ্ছেন। যদিও ভার্চুয়াল জগতের এই কাঁটাছেঁড়া আদৌ ভোটবাক্সে প্রভাব ফেলবে কিনা, সেটা বলা অসম্ভব। তবে, এই তথ্যগুলো ভোটের মধ্যে এনডিএ সমর্থকদের রক্তচাপ বাড়াতে বাধ্য।