করোনা আবহের জেরে কাজ হারিয়ে পরিযায়ী হয়েছেন বহু শ্রমিক। সংক্রমণের ভয় নিয়েই তাঁরা কোনোভাবে বাড়ি ফিরেছেন। এবারের শারদোৎসবে বড়িশা ক্লাবে প্রতিমার প্রতিকৃতিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল সেই পরিযায়ী মায়েইর রূপ। যা সকলের চোখ টেনেছিল। আর সেই মাতৃরূপকেই সংরক্ষণের বিষয়ে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার।
চতুর্থীর দিন দক্ষিণ কলকাতার এই নামজাদা পুজোর উদ্বোধন করে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিনই মা দুর্গার পরিযায়ী রূপটি পছন্দ হয় তাঁর। সূত্রের খবর, সেই সময়ই তিনি ফাইবারের তৈরি এই দুর্গা মূর্তিটি সংরক্ষণের বিষয়ে নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট দফতরে। তার পর থেকেই বড়িশা ক্লাবের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে মূর্তিটি সংরক্ষণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেকথা ক্লাব কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।
আজ, বুধবার প্রতিমা নিরঞ্জনের শেষ দিন। জানা গেছে, বড়িশা ক্লাবের এই প্রতিমাটি এবার নিরঞ্জন হবে না। জানা গেছে, এটি রাখা হবে রবীন্দ্র সরোবরের সংগ্রহশালায়। প্রথমে ঠিক হয়েছিল, নিউটাউনের ইকো পার্কে নিয়ে যাওয়া হবে বড়িশা ক্লাবের এই দুর্গা প্রতিমা। কিন্তু পরে ক্লাব কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের প্রতিমা সংরক্ষিত হবে রবীন্দ্র সরোবরেই।
এ প্রসঙ্গে বড়িশা ক্লাবের কর্মকর্তা স্বপন বড়াল জানিয়েছেন, “আমাদের প্রতিমা সরকারি তত্ত্বাবধানে সংরক্ষিত হবে এটা আমাদের কাছে আনন্দের বিষয়। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে। যে যে পদ্ধতি মেনে সরকার প্রতিমা তাদের হাতে তুলে দিতে বলবেন আমরা সেই প্রক্রিয়া মেনে চলব।” প্রসঙ্গত, বড়িশা ক্লাবের এবারের পুজোর থিম ছিল ‘ত্রাণ’। শিল্পী রিন্টু দাসের ভাবনায় পরিযায়ী মা দুর্গার মূর্তিটি গড়েছিলেন কৃষ্ণনগরের শিল্পী পল্লব ভৌমিক।
মূর্তিটি সরকারি সংরক্ষণশালায় স্থান পাওয়া প্রসঙ্গে থিম শিল্পী রিন্টু দাস বলেছেন, “যেদিন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী বড়িশা ক্লাবের পুজোর উদ্বোধন এসেছিলেন সেদিনই তিনি আমাকে মূর্তিটি সংরক্ষণের বিষয়ে বলেছিলেন। পরে তাঁর সঙ্গে আবার আমার যোগাযোগ হলে, তিনি আমাকে আরও একটি ভাবনার কথা বলেছিলেন। জানিয়েছিলেন কোনও একটি আইল্যান্ডে এই মূর্তিটি পাকাপাকি ভাবে বসানো হবে, সঙ্গে মূর্তিটির নামানুসারে রাস্তার নামকরণ করা হবে। কিন্তু পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম আমাকে জানিয়েছেন আপাতত সরকারি তত্ত্বাবধানে মিউজিয়ামে রাখা হবে মূর্তিটি।”