বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার স্ট্যাটিজিক বিলগ্নিকরণে এবার তেড়েফুঁড়ে ময়দানে নামতে চলেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। ২০২০-২০২১ আর্থিক বছরে সরকারি সম্পত্তি বিক্রির মাধ্যমে অন্তত ২ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু করোনা মহামারী ও লকডাউন সরকারের সব ভাবনা ওলটপালট করে দিয়েছে। তার মধ্যে কর বাবদ আয়ে কোপ পড়ায় রাজকোষ বাড়ন্ত। সরকারের আর্থিক ঘাটতি আকাশ ছোঁয়া। এই পরিস্থিতিতে আর কালবিলম্বে রাজি নন অর্থ মন্ত্রকের কর্তাব্যক্তিরা। সূত্রের খবর, উৎসব পর্ব মিটলেই মোট ৪ টি লাভজনক প্রক্রিয়ার বিলগ্নিকরণের কাজ শুরু হয়ে যাবে।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, আগামী মাসে ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেড, শিপিং কর্পোরেশন, কন্টেনার কর্পোরেশন এবং বিইএমএল-এর নিলাম ও আগ্রহপত্র আহ্বানের মাধ্যমে বিলগ্নিকরণের ঢাকে কাঠি পড়তে চলেছে। এই বিষয়ে প্রাথমিক নীল নকশা করে ফেলেছে কেন্দ্রীয় সরকারের ডিপার্টমেন্ট অফ ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড পাবলিক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট। এই চার সংস্থার বর্তমানে যা শেয়ারমূল্য তাতে বিলগ্নিকরণের মাধ্যমে অন্তত ৪৯,০০০ কোটি টাকা সরকারের ঘরে ঢুকবে বলে আশা গোটা প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত কর্তাব্যক্তিদের।
এ ছাড়া বহু আলোচিত এয়ার ইন্ডিয়ার বিলগ্নিকরণের দিকেও তাকিয়ে আছে গোটা দেশ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রীগোষ্ঠী চলতি মাসেই এই বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়ে দিতে পারে। তেমন হলে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ‘মহারাজা’র আগ্রহী ক্রেতাদের থেকে আগ্রহপত্র আহ্বান করতে পারে সরকার। তবে আগামী বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকের আগে এয়ার ইন্ডিয়া বিক্রির সম্ভাবনা খুবই কম বলে মনে করছেন তাঁরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২০-২১ আর্থিক বছরে ভারতের আর্থিক ঘাটতি জিডিপির ৮ শতাংশ ছাপিয়ে যেতে পারে। এ বছর সরকারের অন্তত ১৪ লক্ষ কোটি টাকা আর্থিক ঘাটতি হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে আয়ের পথ অব্যাহত রাখতে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি করা সরকারের কাছে এক প্রকার বাধ্যবাধকতায় পরিণত হয়েছে বলে মত অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।