সারারাত জাগা। বহুদিনের স্বপ্ন, পরিশ্রম, আর সংকল্প, স্বাধীনতার সোনালি ভোরকে স্পর্শ করতে নানা স্তরে প্রস্তুতিপর্ব চূড়ান্ত হয়েছিল। স্থান ছিল সিঙ্গাপুরের ক্যাথে বিল্ডিং হল। দিনটা ছিল ২১শে অক্টোবর ১৯৪৩।
উপস্থিত ছিলেন পূর্ব প্রাচ্যের ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লিগের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রতিনিধি ও মালয়ে বসবাসকারী হাজার হাজার নাগরিক। আর ছিল অধিবেশন কক্ষের বাইরে উপচে পড়া সমাবেশ।
আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন থেকে শুরু করে, পূর্ব প্রাচ্যে ভারতীয়দের মধ্যে মানব, অর্থ, রসদ সম্পদ সম্পর্কে সর্বময় সংহতির আহ্বান জানিয়েছিলেন নেতাজি। মধ্যবিত্ত, দরিদ্র ও ধনী শ্রেণী সবাইকে জাতীয় সেবা ও ত্যাগের আহ্বান করেছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক স্তরে সংগ্রামের সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরে জানিয়েছিলেন ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের কাহিনী। বাংলায় অনাহারে যখন লাশের সংখ্যা বেড়ে চলছিল … নেতাজি তখন স্বাধীন ভারত গড়ে তোলার চেষ্টায় আহার-নিদ্রা ভুলেছিলেন। সমস্ত খবর পেতেন তিনি। যতবার খাদ্যশস্য, চাল ইত্যাদি ভারতে পাঠাবার চেষ্টা করেছিলেন, নিষ্ঠুর ব্রিটিশ প্রশাসন ততবার প্রত্যাখ্যান করেছিল সে প্রস্তাব। নেতাজি প্রবাসী ভারতীয়দের আরও জানিয়েছিলেন –
‘‘ভারতের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক অস্থিরতা গভীর আকার ধারণ করেছে। বিশেষত বাংলায় দুর্ভিক্ষজনিত অবস্থা। হৃদয়ভেদী এই অবস্থায় একটি মাত্র আশা, অনাহার বিপ্লবের জন্ম দেয় …। আমাদের কর্মকাণ্ডের প্রতি শুধু ভারতীয় জনগণই পূর্ণ সমর্থন করছেন তাই নয়, ব্রিটিশ-ভারতীয় বাহিনীর একটি বড় অংশেরও সমর্থন রয়েছে এই কাজে। …’’
শেষে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘‘বন্ধুগণ! এখন আপনাদেরকে জানাতে চাই যে, লিগের বিকেলের অধিবেশনে আজাদ-হিন্দ সরকারের গঠন ঘোষণা করব।’’
বিকেল চারটেয় সভাগৃহ দেশি-বিদেশি প্রতিনিধিতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। জাপানকে ধন্যবাদ জানানোর পর সদ্য স্বাধীন হওয়া বর্মা ও ফিলিপিন সরকারকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন নেতাজি। আজাদ হিন্দ সরকার গঠনের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেছিলেন হিন্দুস্তানিতে, সেটা তামিল ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন চিদম্বরম।
নেতাজি আইরিশ ও তুরস্কের উদাহরণ টেনে জানিয়েছিলেন, আজাদ হিন্দ সাময়িক সরকার এবং মন্ত্রিমণ্ডলীতে সামরিক বাহিনীর প্রতিনিধির সঙ্গে অসামরিক বিভাগের প্রতিনিধিত্ব থাকবে। মন্ত্রিসভায় উপদেষ্টামণ্ডলীতে থাকবেন ‘করিম গনি’, ‘দেবনাথ দাস’, ‘ডি এম খান’, ‘এ ইয়েলাপ্পা’, ‘জে থিবি’, ‘সর্দার ঈশার সিং’ এবং ‘এ এন সরকার’ (আইন বিষয়ক উপদেষ্টা)। প্রধান উপদেষ্টা ‘রাসবিহারী বোস’। তিনি আরও জানিয়েছিলেন, অস্থায়ী সরকার ভারতের মাটিতে স্থানান্তরিত হলে সেখানে সাধারণ সরকারের মতো সব কিছুই পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করবে। খোলা হবে অনেক নতুন বিভাগও। ‘রাষ্ট্রপ্রধান’, ‘প্রধানমন্ত্রী’, ‘সমর ও বৈদেশিক নীতি’র দায়িত্বে ‘সুভাষচন্দ্র বসু’। ‘নারী সংগঠনে’ ‘ক্যাপ্টেন লক্ষ্মী স্বামীনাথন’, ‘এস এ আইয়ার’ (প্রচার বিভাগ), ‘এ সি চ্যাটার্জি’ (অর্থ)। এছাড়াও লেফটেন্যান্ট কর্নেল – ‘আজিজ আহমেদ’, ‘এম এস ভগৎ’, ‘জে কে ভোঁসলে’, ‘গুলজারা সিং’, ‘এম জেড কিয়ানি’, ‘এ ডি লোগনাথন’, ‘ঈশানকাদির’, ‘শাহনওয়াজ খান’ এবং সচিব সম্পাদক হিসেবে ‘এ এম সহায়’।
বিপুল উল্লাসে দীর্ঘ অভিনন্দন জ্ঞাপন করা হয়েছিল। সে দিনের প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা থেকে জানা যায়, নেতাজি যখন হিন্দুস্তানিতে শপথ গ্রহণ করেছিলেন তখন তাঁর চোখে বারংবার জল চলে আসছিল। মর্মস্পর্শী কণ্ঠে তিনি যা বলেছিলেন, তা উপস্থিত দর্শকদের হৃদয়ে পৌঁছে গিয়েছিল। আজ থেকে ৭৭ বছর আগে তিনি সেই ঐতিহাসিক শপথ বাক্য পাঠ করেছিলেন –
‘‘আমি সুভাষচন্দ্র বসু ঈশ্বরের নামে গ্রহণ করছি এই পুণ্য শপথ; ভারতবর্ষে ও ভারতবাসীর জন্য জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত পবিত্র স্বাধীনতার যুদ্ধ পরিচালনা করব। … চিরকাল আমি থাকব ভারতের সেবক। ভারতের ৩৮ কোটি ভ্রাতা-ভগিনীর কল্যাণ সাধন করাই হবে আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ কর্তব্য। … স্বাধীনতা অর্জনের পরেও সেই স্বাধীনতা রক্ষাকল্পে আমি দেহের শেষ রক্তবিন্দু দান করবার জন্য প্রস্তুত থাকব।’’
মন্ত্রিবর্গের শপথ গ্রহণের পর নেতাজি অস্থায়ী আজাদ হিন্দ সরকারের ঘোষণাপত্র পাঠ করেছিলেন ইংরেজিতে। তিনি প্রথমে ‘সিরাজউদ্দৌলা’, ‘মোহনলাল’, ‘হায়দর আলি’, ‘টিপু সুলতান’, ‘ভেলুতাপ্পি’, ‘আপ্পাসাহেব ভোঁসলে’, ‘পেশোয়ারের বাজিরাও’, ‘অযোধ্যার বেগমগণ’, ‘পাঞ্জাবের সর্দার শ্যাম সিং’, ‘ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈ’, ‘তাঁতিয়া তোপি’, ‘কুঁয়র সিং’, ‘নানাসাহেব’ প্রমুখ ব্রিটিশ বিরোধী পূর্বতন সংগ্রামের নায়কদের স্মরণ করে জানিয়েছিলেন –
‘‘বেদনাদায়ক ব্রিটিশ শাসনের শেষ চিহ্ন ধ্বংস করতে প্রয়োজন একটি অগ্নিশিখার। ভারতীয় মুক্তিবাহিনীর কাজ হল সেই অগ্নি শিখাকে প্রজ্বলিত করা। … এই সামরিক সরকারের কাজ হবে ব্রিটিশ ও মিত্রশক্তিকে ভারতের মাটি থেকে বিতাড়িত করা। তারপর এই অস্থায়ী সরকার প্রতিষ্ঠা করবে ভারতবাসীর ইচ্ছানুযায়ী তাঁদের আস্থাভাজন একটি স্থায়ী সরকার। … প্রত্যেক নাগরিককে যে কোনও ধর্মপন্থা অনুসরণের স্বাধীনতা, সমানাধিকার, সমান সুযোগ দান এই সরকারের প্রতিশ্রুতি। … সমগ্র জাতির সুখ সমৃদ্ধির ব্যবস্থা করতে আজাদ হিন্দ সরকার কৃতসংকল্প। নিজ কার্য সিদ্ধির স্বার্থে বিদেশি সরকার সুচতুরভাবে ভারতীয়দের মধ্যে সৃষ্টি করেছিল যে সমস্ত বিভেদ সেসব নিঃশেষ করে দেবে এই সরকার … ঈশ্বরের নামে, আমাদের যেসব পূর্বপুরুষ ভারতবাসীকে এক জাতিতে পরিণত করার চেষ্টা করে গিয়েছেন তাঁদের নামে এবং অতীতের যে সব বীরপুরুষেরা শৌর্য ও ত্যাগের দৃষ্টান্ত রেখে গিয়েছেন আমাদের জন্য, তাঁদের পবিত্র নামে – আমরা আহ্বান জানাচ্ছি প্রত্যেক ভারতবাসীকে, আজাদ হিন্দ সরকারের পতাকাতলে সমবেত হয়ে মুক্তি সংগ্রামে যুক্ত হতে। …’’
আজাদ হিন্দ সরকার গঠিত হয়েছিল একটি ‘ক্যাবিনেট’ নিয়ে। এই ক্যাবিনেটের ‘সর্বাধিনায়ক’ ছিলেন ‘নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু’। আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি ছিলেন ‘আজাদ হিন্দ সরকারের রাষ্ট্রপতি’, ‘প্রধানমন্ত্রী’ এবং ‘সমর ও পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী’।
ক্যাপ্টেন ডাক্তার ‘লক্ষ্মী স্বামীনাথন’ (পরে বিবাহিত জীবনে ‘লক্ষ্মী সেহগল’) ছিলেন ‘নারী সংগঠন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী’। এই দায়িত্বের সঙ্গে সঙ্গে তিনি আজাদ হিন্দ ফৌজের মহিলা ব্রিগেড ‘রানি ঝাঁসি রেজিমেন্ট’ কম্যান্ডের দায়িত্বেও ছিলেন। এশিয়ায় এই ধরনের নারীবাহিনী ছিল সর্বপ্রথম এবং এক সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গির পরিচায়ক। ডাঃ লক্ষ্মী ছিলেন সিঙ্গাপুরের এক বিশিষ্ট ‘স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ’। পরে তিনি তাঁর লোভনীয় কর্মজীবন ত্যাগ করে আজাদ হিন্দ ফৌজের রানি ঝাঁসি রেজিমেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
অস্থায়ী আজাদ হিন্দ সরকারের মন্ত্রিসভার অন্যান্য ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রীরা’ হলেন:
‘এস. এ. আইয়ার’ – ‘সম্প্রচার ও প্রচারণা মন্ত্রী’
‘লেফট্যানেন্ট কর্নেল এ. সি. চ্যাটার্জি’ – ‘অর্থমন্ত্রী’
আজাদ হিন্দ সরকারের সশস্ত্র বাহিনী মন্ত্রীরা ছিলেন আজাদ হিন্দ ফৌজের প্রতিনিধি। এঁরা হলেন:
লেফট্যানেন্ট কর্নেল ‘আজিজ আহমেদ’
লেফট্যানেন্ট কর্নেল ‘এন. এস. ভগত’
লেফট্যানেন্ট কর্নেল ‘জে. কে. ভোঁসলে’
লেফট্যানেন্ট কর্নেল ‘গুলজারা সিং’
লেফট্যানেন্ট কর্নেল ‘এম. জেড. কিয়ানি’
লেফট্যানেন্ট কর্নেল ‘এ. ডি. লোকণাথন’
লেফট্যানেন্ট কর্নেল ‘এহসান কাদির’
লেফট্যানেন্ট কর্নেল ‘শাহনওয়াজ খান’
আজাদ হিন্দ সরকারের সংগঠন ও প্রশাসন পরিচালনার জন্য সুভাষচন্দ্রের একাধিক সচিব ও উপদেষ্টা নিযুক্ত ছিলেন। এঁরা হলেন –
১) ‘এ. এন. সহায়’ – সচিব
২) ‘করিম ঘানি’
৩) ‘দেবনাথ দাস’
৪) ‘ডি. এম. খান’
৫) ‘এ. এল্লাপা’
৬) ‘জে. থিভি’
৭) ‘সর্দার ইসের সিংহ’
৮) ‘এ. এন. সরকার’ – সরকারের আইনি উপদেষ্টা।
আজাদ হিন্দ সরকারে এই সকল সচিব ও উপদেষ্টাগণ মন্ত্রীর সম মর্যাদা পেতেন। আজাদ হিন্দ সরকারের দৈনন্দিন কাজকর্মের বিবরণী ধারাবাহিকভাবে নথিবদ্ধ করা হয়নি। তাই সুভাষচন্দ্রের সহকারী মন্ত্রিত্বের দায়িত্বভার পালন ছাড়া সরকারি পদাধিকারীরা আর কি কি কাজ করতেন সে বিষয়ে সঠিক জানা যায় না।
এরপর ইতিহাসের চাকা দ্রুত এগতে থাকে। জাপানের সক্রিয় সহায়তা পেলেও ক্রমশ প্রবাসী ভারতীয়দের মাতৃভূমির প্রতি প্রবল শ্রদ্ধার কারণে আজাদ হিন্দ সবদিক দিয়ে নিজস্ব শক্তির উপর নির্ভরশীল হয়ে ওঠে। ইউরোপের জামার্নিতে নেতাজির হাতে গড়া ইন্ডিয়ান লিজিয়ন পেয়েছিল আধা সামরিক স্বীকৃতি কিন্তু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সেই নেতাজির প্রবল মেধা ও বৈপ্লবিক ব্যক্তিত্বের সাংগঠনিক মহিমায় প্রতিষ্ঠিত হল আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ও বৈধ আজাদ হিন্দ সরকার। একে একে স্বাধীন সরকারগুলির তরফে স্বীকৃতির শুভেচ্ছাবার্তা আসতে লাগল জার্মানি, ইতালি, ক্রোয়েশিয়া, জাপান, চীন (নানসিং সরকার), ফিলিপাইন, বর্মা, শ্যামদেশ ও মাচুকুয়ো থেকে। যুদ্ধে নিরপেক্ষ দেশ আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রপ্রধান ইমন, ডি ভ্যালেরা নেতাজিকে পাঠান ব্যক্তিগত অভিনন্দন।
আশ্চর্যের বিষয়, সোভিয়েত রাশিয়া মিত্রপলের ব্রিটিশ আমেরিকানদের পক্ষে থাকলেও নীরবে ও গোপনে আজাদ হিন্দ সরকারকে স্বীকৃতি ও সে দেশে দূতাবাসের ব্যবস্থা করেছিলেন। সাম্প্রতিককালের মুখার্জি কমিশন সূত্রে এমন তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে।
আত্মমর্যাদায় বলীয়ান আজাদ হিন্দ সরকারের রাষ্ট্রপ্রধান সামরিক লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশে সফর করেন। প্রত্যেক দেশেই হিন্দুস্তানি ভাষায় কবিগুরুর জনগণমনঅধিনায়ক জাতীয় সংগীতের মর্যাদায় বেজে উঠত। প্রবাসী ভারতীয়দের মনে তীব্র উন্মাদনা ও দেশপ্রেম সঞ্চারিত করেছিলেন নেতাজি। সময়ের থেকে অনেক এগিয়ে থাকা নেতাজি গঠন করেছিলেন নারী বাহিনী ঝাঁসি রেজিমেন্ট। সেখানেও ছিল মাতৃভূমির জন্য রক্তস্বাক্ষরের অঙ্গীকার।
ব্রিটিশ মুক্ত আন্দামান-নিকোবর ভূখণ্ডগুলি জাপান হস্তান্তরিত করল আজাদ হিন্দকে। নেতাজি দ্বীপভূমিতে পদার্পণ করে নামকরণ করলেন শহিদ ও স্বরাজ দ্বীপ। মুক্ত সেলুলার জেল পরিদর্শন করলেন রাষ্ট্রপ্রধান সুভাষচন্দ্র। উত্তোলন করলেন আজাদ হিন্দ সরকারের জাতীয় পতাকাটি। দু’বারের নির্বাচিত জাতীয় কংগ্রেসের রাষ্ট্রপতি সুভাষচন্দ্রের প্রিয় ও ভারতবাসীর কাছে অতি পরিচিত চরকা শোভিত ত্রিবর্ণ পতাকা ছিল আজাদ হিন্দ সরকারের পতাকা ও সামরিক শক্তি আজাদ হিন্দ ফৌজের পতাকা ছিল ব্যাঘ্র শোভিত ত্রিবর্ণ পতাকা। তাই, প্রচার, প্রশিক্ষণ, পুনর্গঠন, বিদেশ, শ্রমসহ ২৪টি বিভাগের পাশাপাশি বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে নেতাজির উদ্দীপনামূলক ভাষণ, বিভিন্ন ভাষায় পত্রপত্রিকা প্রকাশ, সিক্রেট সার্ভিস প্রভৃতি কার্যকলাপ বিশ্বের সামরিক বাহিনীর ও মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে এক অনন্য স্থান করে দিয়েছে আজাদ হিন্দকে। বিভিন্ন ডিভিশনে, রেজিমেন্টে বিভক্ত আজাদ হিন্দ ফৌজ অদম্য শক্তিতে বার্মা সীমান্ত অতিক্রম করে মূল ভারত ভূখণ্ডে আধিপত্য কায়েম করে। প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটারের মতো এলাকায় স্থানীয় প্রশাসন শুরু হয়। আনুষ্ঠানিক সরকার ঘোষণার দু’দিনের মধ্যেই ব্রিটেন ও আমেরিকার বিরুদ্ধে আজাদ হিন্দ যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষ করে বাংলায় ব্রিটিশের তৈরি দুর্ভিক্ষ নেতাজিকে বিচলিত করেছিল। কোহিমা ইম্ফল ইরাবতী নদী তট রণাঙ্গনে ঘটেছিল রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম। ঘটেছিল বিশ্বাসঘাতকতার জেরে অনেক আজাদি সেনার মৃত্যু। তবু হাকা, কালম, কাবা মৃত্যু উপত্যকায় কিংবা টামু, পালেলে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে আজাদি সেনাদের গেরিলা যুদ্ধ ইতিহাসে অনন্য। জুলাই মাসের প্রবল পাহাড়ি বর্ষায় জয় ধরে রাখা ও যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে উঠেছিল। এসেছিল প্রত্যাবর্তনের নির্দেশ। দুর্ভিক্ষ পীড়িত বাংলায় তখন চিন্তা চেতনায় অবক্ষয় শুরু হয়েছে। সুভাষচন্দ্রের অনুপস্থিতির সুযোগে রাজনৈতিক শত্রুরা নেতাজি বিরোধী জিগির জনমনে তুলে দিয়েছিল ব্রিটিশের সঙ্গে গলা মিলিয়ে। জাতীয়তাবাদী, বিপ্লবী নেতা কর্মীরা তখন অধিকাংশ জেলে। আজাদ হিন্দ-এর ভারত অভিযানকে, আজাদি সেনাদের আত্মত্যাগকে ভারতবাসীর কাছে জানতে না দিয়ে নেতাজির বিরুদ্ধে অশালীন কার্টুন ও কুৎসা রটনা হতে লাগল। নেতাজির ভারতে পাঠানো সিক্রেট সার্ভিসের লোকজনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে ব্রিটিশের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়। বাংলার মাটিতে আজাদি সেনাদের সীমান্তে যুদ্ধজয়ের সঠিক সংবাদ পৌঁছে দেওয়া হলে জাগ্রত জনতার চাপে সরাসরি দিল্লি জয় কঠিন হতো না। কিন্তু ব্রিটিশের চালে ভুল হওয়ার কারণে পরোক্ষে দিল্লি জয় সম্ভব করে তুলেছিল। নেতাজি বলেছিলেন দিল্লির পথ অনেক। বাস্তব ক্ষেত্রে হিন্দু মুসলিম ও শিখ এই তিন সেনানায়কের দিল্লির লালকেল্লায় বিচার পর্ব শুরু হতেই দেশবাসীর কাছে গোপন রাখা আজাদ হিন্দের সংগ্রাম কাহিনী প্রকাশ্যে চলে আসে। দেশ জুড়ে গণবিক্ষোভ, নৌ সেনা, বায়ু সেনায় বিদ্রোহ শুরু হয়। দ্রুত দেশ ভাগের সিদ্ধান্ত নেয় ব্রিটিশ। সহমত পোষণ করেন তৎকালীন জাতীয় নেতৃত্ব। ব্যতিক্রম ছিলেন কেউ কেউ। তাঁদের অন্যতম সীমান্ত গান্ধী বা খান আবদুল গফফর খান। গান্ধীজি তখন সবার কাছেই ব্রাত্য। সঙ্গে চোখের জল আর ‘বেটা’ সুভাষের জন্য আর্তি। দেশি বিদেশি গবেষক, ঐতিহাসিক ও রাজনীতিকরা স্বীকার করেছেন স্রেফ নেতাজির বৈপ্লবিক ভারত অভিযান ব্রিটিশকে বাধ্য করেছিল ক্ষমতা হস্তান্তর করতে। রাষ্ট্রীয় স্তরে কিংবা পাঠ্য বইতে স্বীকৃতি না মিললেও আন্তর্জাতিক এক সমীক্ষায় সর্বকালীন স্বীকৃতি মিলেছে আজাদ হিন্দের লড়াই। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রবাসী ভারতীয়দের কোটি কোটি অর্থ সম্পদ সদ্য ক্ষমতা লাভ করা সরকার লুট করেছিল। আজাদি সেনা কিংবা রানিদের চাকরি মেলেনি, পেনশন হয়নি, এমনকী অনেকের এদেশে ঠাঁইও হয়নি। যশোরের ঝিকরগাছা, বারাসত, বারাকপুরের নীলগঞ্জ, মুলতান, দিল্লির বাহাদুরগড় প্রভৃতি বন্দি শিবিরগুলিতে অকথ্য অত্যাচার, ফাঁসি এবং গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয় আজাদিদের। মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়, কোথাও বা জলে ভাসিয়ে দেওয়া হয় সেই দেহ। বিশ্বের কাছে এই বর্বরতা সেদিন গোপন করা হয়েছিল। প্রতিবেদক সম্প্রতি যশোরের কপোতাক্ষ নদী ও বারাকপুরের লাবণ্যবতী নদীর (নোয়াই খাল) পাশেই আজাদি শহিদদের রক্তে রাঙানো ভূমিকে প্রণাম করে এসেছে। দিল্লির ইন্ডিয়া গেটে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈনিকদের নাম উৎকীর্ণ আছে যেখানে নেই ব্রিটিশের বিরুদ্ধে লড়াই করা কোনও আজাদি সেনার নাম। দিল্লির বুকে এত বছর পরে যদি আই এন এ গেট বা মেমোরিয়াল অব ইউনিটির স্মারক স্তম্ভে ফাইলে প্রকাশিত হাজার হাজার আজাদি সেনাদের নাম উৎকীর্ণ রাখা যেত, তাহলে জাতীয় লজ্জা কিছুটা হলেও মোচন হতো। ১৯৯৩ সালে আজাদ হিন্দের সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্যাপন কালে আজাদ হিন্দের নানা সৈনিক ও ঝাঁসি রানিরা আজ প্রায় সবাই প্রয়াত। কলকাতার বুকে রবীন্দ্রসদনে হয়েছিল মূল অনুষ্ঠান। চিরকালীন গর্বের উত্তরাধিকার নেতাজি আমাদের জন্য রেখে গিয়েছেন, যা থেকে একদা প্রেরণা লাভের কথা কলকাতায় এসে স্বীকার করে গিয়েছিলেন মুজিবর রহমান … নেলসন ম্যান্ডেলাও।
২রা জৈষ্ঠ্য, ১৩৩০ বঙ্গাব্দে, একটি লেখায় সুভাষচন্দ্র লিখেছিলেন –
‘‘আমরা এই পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করিয়াছি একটা উদ্দেশ্য সাধনের নিমিত্ত – একটা বাণী প্রচারের জন্য। আলোক জগৎ উদ্ভাসিত করিবার জন্য যদি গগনে সূর্য উদিত হয়, গন্ধ বিতরণের উদ্দেশ্যে বনমধ্যে যদি কুসুমরাজি বিকশিত হয়, অমৃতময় বারিদান করিতে তটিনী যদি সাগরাভিমুখে প্রবাহিত হয় – যৌবনের পূর্ন আনন্দ ও ভরা প্রাণ লইয়া আমরাও মর্ত্যলোকে নামিয়াছি একটা সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য। যে অজ্ঞাত গূঢ় উদ্দেশ্য আমাদের ব্যর্থ জীবন কে সার্থক করিয়া তোলে তাহা আবিষ্কার করিতে হইবে – ধ্যানের দ্বারা, কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা দ্বারা।
যৌবনের পূর্ন জোয়ারে আমরা ভাসিয়া আসিয়াছি সকলকে আনন্দের আস্বাদ দিবার জন্য, কারণ আমরা আনন্দের স্বরূপ। আনন্দের মুর্ত বিগ্রহ রূপে আমরা মর্ত্যে বিচরণ করিব। নিজেদের আনন্দে আমরা হাসিব – সঙ্গে জগৎকেও মাতাইব। আমরা যেদিকে ফিরিব, নিরানন্দের অন্ধকার লজ্জায় পলায়ন করিবে, আমাদের প্রাণময় স্পর্শের প্রভাবে রোগ, শোক, তাপ দূর হইবে। এই দুঃখসঙ্কুল, বেদনাপূর্ন নরলোকে আমরা আনন্দ-সাগরের বাণ ডাকিয়া আনিব।
আশা, উৎসাহ, ত্যাগ, বীর্য্য লইয়া আমরা আসিয়াছি। আমরা আসিয়াছি সৃষ্টি করিতে – কারণ সৃষ্টির মধ্যেই আনন্দ। তনু, মন-প্রাণ, বুদ্ধি ঢালিয়া দিয়া আমরা সৃষ্টি করিব। নিজেদের মধ্যে যাহা কিছু সত্য, যাহা কিছু সুন্দর, যাহা কিছু শিব আছে – তাহা আমরা সৃষ্ট পদার্থের মধ্যে ফুটাইয়া তুলিব। আত্মদানের মধ্যে যে আনন্দ সে আনন্দে আমরা বিভোর হইব, সেই আনন্দের আশ্বাস পাইয়া পৃথিবীও ধন্য হইবে।
কিন্তু আমাদের দেওয়ার শেষ নাই; কর্মেরও শেষ নাই, কারণ –
‘যত দেব প্রাণ বহে যাবে প্রাণ
ফুরাবে না আর প্রাণ;
এত কথা আছে এত গান আছে
এত প্রাণ আছে মোর;
এত সুখ আছে, এত সাধ আছে
প্রাণ হয়ে আছে ভোর।’
অনন্ত আশা, অসীম উৎসাহ, অপরিমেয় তেজ ও অদম্য সাহস লইয়া আমরা আসিয়াছি – তাই আমাদের জীবনের স্রোত কেহ রোধ করিতে পারিবে না। অবিশ্বাস ও নৈরাশ্যের পর্বতরাজি সম্মুখে আসিয়া দাঁড়াক, অথবা সমবেত মনুষ্য-জাতির প্রতিকূল শক্তি আমাদিগকে আক্রমন করুক, – আমাদের আনন্দময়ী গতি চিরকাল অক্ষুন্নই থাকিবে।
আমাদের একটা বিশিষ্ট ধর্ম আছে – সেই ধর্মই আমরা অনুসরণ করি। যাহা নতুন, যাহা সরস, যাহা অনাস্বাদিন – তাহারই উপাসক আমরা। আমরা অনিয়া দি পুরাতনের মধ্যে নুতনকে, জড়ের মধ্যে চঞ্চলকে, প্রবীনের মধ্যে নবীনকে এবং বন্ধনের মধ্যে অসীমকে। আমরা অতীত ইতিহাসলব্ধ অভিজ্ঞতা সব সময় মানিতে প্রস্তুত নই। আমরা অনন্ত পথের যাত্রী বটে কিন্তু আমরা অচেনা পথই ভালবাসি – অজানা ভবিষৎই আমাদের নিকট প্রিয়। আমরা চাই, ‘the right to make blunders’, অর্থাৎ ‘ভুল করিবার অধিকার’। তাই আমাদের স্বভাবের প্ৰতি সকলের সহানুভূতি নাই, আমরা অনেকের নিকট সৃষ্টিছাড়া ও লক্ষীহারা।
ইহাতেই আমাদের আনন্দ, এখানেই আমাদের গর্ব। যৌবন সর্বকালে সর্বদেশে সৃষ্টিছাড়া ও লক্ষীহারা। অতৃপ্ত আকাঙ্খার উন্মাদনায় আমরা ছুটিয়া চলি – বিজ্ঞের উপদেশ শুনিবার পর্য্যন্ত অবসর আমাদের নাই। ভুল করি, ভ্রমে পড়ি, আছাড় খাই, কিন্তু কিছুতেই আমরা উৎসাহ হারাই না বা পশ্চাৎপদ হই না। আমাদের তাণ্ডবলীলার অন্ত নাই, কারণ – আমরা অবিরামগতি।
আমরাই দেশে দেশে মুক্তির ইতিহাস রচনা করিয়া থাকি। আমরা শান্তির জল ছিটাইতে এখানে আসি নাই। বিবাদ সৃষ্টি করিতে, সংগ্রামের সংবাদ দিতে, প্রলয়ের সূচনা করিতে আমরা আসিয়া থাকি। যেখানে বন্ধন, যেখানে গোঁড়ামি, যেখানে কুসংস্কার, যেখানে সংকীর্ণতা – সেইখানেই আমরা কুঠার হস্তে উপস্থিত হই। আমাদের একমাত্র ব্যবসায় মুক্তির পথ চিরকাল কণ্টকশূন্য রাখা, যেন সে পথ দিয়া মুক্তির সেনা অবলীলাক্রমে গমনাগমন করিতে পারে।
মনুষ্য জীবন আমাদের নিকট একটা অখন্ড সত্য। সুতরাং সে স্বাধীনতা আমরা চাই – সে স্বাধীনতা ব্যতীত জীবনধারণই একটা বিড়ম্বনা – যে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যুগে যুগে আমরা হাসিতে হাসিতে রক্তদান করিয়াছি – সে স্বাধীনতা সর্বতমুখী। জীবনের সকল ক্ষেত্রে, সকল দিকে আমরা মুক্তির বাণী প্রচার করিবার জন্য আসিয়াছি। কি সমাজনীতি, কি অর্থনীতি, কি রাষ্ট্রনীতি, কি ধর্মনীতি – জীবনের সকল ক্ষেত্রে আমরা সত্যের আলোক, আনন্দের উচ্ছাস ও উদারতার মৌলিক ভিত্তি লইয়া আসিতে চাই।
অনাদিকাল হইতে আমরা মুক্তির সংগীত গাহিয়া আসিতেছি। শিশুকাল হইতে মুক্তির আকাঙ্খা আমাদের শিরায় শিরায় প্রবাহিত। জন্মিবামাত্র আমরা যে কাতরকণ্ঠে ক্রন্দন করিয়া উঠি সে ক্রন্দন শুধু পার্থিব বন্ধনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ জানাইবার জন্য। শৈশবে ক্রন্দনই আমাদের একমাত্র বল থাকে কিন্তু যৌবনের দ্বারদেশে উপনীত হইলে বাহু ও বুদ্ধি আমাদের সহায় হয়। আর এই বুদ্ধি ও বাহুর সাহায্যে আমরা কি না করিয়াছি, – ফিনিসিয়া, এসিরিয়া, ব্যবিলোনিয়া, মিসর, গ্রীস, রোম, তুরস্ক, ইংলন্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, চীন, জাপান, হিন্দুস্তান – যে কোনও দেশের ইতিহাস পড়িয়া দেখ দেখিবে যে ইতিহাসের প্রত্যেক পৃষ্ঠায় আমাদের কীর্তি জ্বলন্ত অক্ষরে লেখা আছে। আমাদের সাহায্যে সম্রাট সিংহাসনে আরোহণ করিয়াছেন, আবার আমাদেরই অঙ্গুলিসংকেতে সভয়ে সিংহাসন ত্যাগ করিয়া তিনি পলায়ন করিয়াছেন। আমরা একদিকে প্রস্তুরীভূত প্রেমাশ্রুরূপী তাজমহল যেমন নির্মাণ করিয়াছি অপরদিকে রক্তস্রোতে ধরণী বক্ষও রঞ্জিত করিয়াছি। আমাদের সমবেত শক্তি লইয়া সমাজ, রাষ্ট্র, সাহিত্য কলা, বিজ্ঞান যুগে যুগে দেশে দেশে গড়িয়া উঠিয়াছে; আবার যখন রুদ্র করালমূর্তি ধারণ করিয়া আমরা যখন তান্ডব নৃত্য আরম্ভ করিয়াছি তখন সেই তান্ডব নৃত্যের একটা পদক্ষেপের সঙ্গে কত সমাজ, কত সাম্রাজ্য ধূলায় মিশিয়া গিয়াছে।
এতদিন পরে নিজের শক্তি আমরা বুঝিয়াছি, নিজের ধর্ম চিনিয়াছি। এখন আমাদের শাসন বা শোষণ করে কে? এই নবজাগরণের মধ্যে সবচেয়ে বড় কথা, সবচেয়ে বড় আশা – তরুণের আত্মপ্রতিষ্ঠা লাভ। তরুণের প্রসুপ্ত আত্মা যখন জাগরিত হইয়াছে – তখন জীবনের মধ্যে সকল দিকে সকল ক্ষেত্রে যৌবনের রক্তিমরাগ আবার দেখা দিবে। এই যে তরুণের আন্দোলন – এটা যেমন সর্বতমুখী তেমন বিশ্বব্যাপী। আজ পৃথিবীর সকল দেশে, বিশেষতঃ যেখানে বার্ধক্যের শীতল ছায়া দেখা দিয়াছে, তরুণসম্প্রদায় মাথা তুলিয়া প্রকৃতস্থ হইয়া সদর্পে সেখানে দন্ডায়মান হইয়াছে। কোন দিব্য আলোকে পৃথিবীকে ইহারা উদ্ভাসিত করিবে তাহা কে বলিতে পারে? ওগো আমার তরুণ জীবনের দল, তোমরা ওঠো, জাগো, ঊষার কিরণ যে দেখা দিয়াছে!’’
আমরা কি আজও জেগেছি?
(তথ্যসূত্র:
১- তরুণের স্বপ্ন, সুভাষচন্দ্র বসু।
২- আজাদ হিন্দ ফৌজের সঙ্গে, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, আনন্দ পাবলিশার্স।
৩- ২৮শে অক্টোবর ২০১৮ সালে বর্তমান পত্রিকায় ডা. জয়ন্ত চৌধুরী লিখিত প্রবন্ধ।
৪- Subhas Chandra Bose, The Indian National Army, and The War of India’s Liberation, Journal of Historical Review, 3, no. 4 – Ranjan Borra.)
মতামত লেখকের ব্যক্তিগত