ক্যানসার পেশেন্ট তার উপর করোনার থাবা। কার্যত দেড় মাসের ব্যবধানে দুই মারণ ব্যাধিকে হেলায় হারিয়ে নজির গড়লেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিয়াল্লিশ বছরের বধূ বাসনা মাইসা৷ বাড়ি কুলতলির বৈকণ্ঠপুরে। ৭ সেপ্টেম্বর বাসনাদেবীকে ভরতি করা হয় কলকাতার এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
ফ্যামিলিয়াল অ্যাডেনোমেটাস পলিপোসিস, দশ হাজারে একজনের এই প্রাণঘাতী রোগ হয়। এতটাই বিরল এই রোগ। এর জেরে বৃহদন্ত্রে ‘প্রিক্যানসারাস পলিপ’-এর জন্ম হয়। যার মধ্যে ক্যানসার বাসা বাঁধার প্রমাণ মেলায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়ে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এফএপি জিনবাহিত রোগ বলেই জানা যাচ্ছে। অস্ত্রোপচারের আগে বাসনাদেবীর রুটিন কোভিড টেস্ট হয়। রিপোর্ট পজিটিভ আসে। বাসনাদেবীর বেশ কিছু উপসর্গ ছিল। কোভিড ওয়ার্ডে নিয়ে গিয়ে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। কোভিড নেগেটিভ হলে ৫ অক্টোবর ফের বাসনাদেবীকে এনআরএস হাসপাতালে ভরতি করা হয়। অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি হিসাবে কোলনোস্কোপি-সহ যাবতীয় রক্তের পরীক্ষা করা হয়। ১৪ অক্টোবর অস্ত্রোপচার হয়। সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে ‘টোটাল প্রক্টোকোলেকটমি উইথ এন্ড ইলিওস্টোমি’ হয়। বৃহদন্ত্রের কিছুটা অংশ বাদ দেওয়া হয়।
অধ্যাপক উৎপল দের নেতৃত্বে ডা. ঋতঙ্কর সেনগুপ্ত, ডা. রতন নস্কর, ডা. বিধ্যায়ক, ডা. সুচেতা সরকার, ডা. রিয়া আগরওয়ালের মতো একঝাঁক চিকিৎসক অস্ত্রোপচারে অংশ নেন। বাসনাদেবীর পরিবার ডাক্তারদের কুর্নিশ জানিয়েছেন।
তবে ডাক্তারবাবুরা অবশ্য বাসনাদেবীকে পালটা কুর্নিশ জানিয়েছেন। তাঁদের মত, কোভিড এবং ক্যানসারের মতো দুই মারণ রোগকে যেভাবে মনের জোরে সামলেছেন, তাতে কৃতিত্ব বাসনাদেবীরই প্রাপ্য।