সেই বীভৎস ঘটনার পর কেটে গিয়েছে ১ মাস। যার মধ্যে তোলপাড় হয়েছে গোটা দেশ এবং জাতীয় রাজনীতি। বিরোধীদের চাপে পড়ে শেষ অবধি এই ধর্ষণ কাণ্ডের তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতেই তুলে দিয়েছে কেন্দ্র। তবুও হাথরসের সেই গ্রামে এখনও ‘নিরাপত্তার অভাব’ বোধ করছে নির্যাতিতা দলিত তরুণীর পরিবার। তাই গ্রামের পাট চুকিয়ে দিল্লীতে গিয়ে আশ্রয় নিতে চায় পরিবারটি। রাজধানী শহরে থেকেই ন্যায়বিচার আদায়ের লড়াই চালিয়ে যেতে চান ওই পরিবারের সদস্যরা।
গণধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে চারপাশ থেকে উচ্চ বর্ণের লোকজনের শাসানি শুনতে হয়েছে পরিবারটিকে। এমনকী বিজেপির একাধিক নেতাও উল্টে পরিবারটিকে দোষারোপ করেছেন। এমনকি অভিযুক্তদের হয়ে সাফাইও গেয়েছেন। পুলিশ-প্রশাসনকেও যে পরিবারটি পাশে পেয়েছেন, এমনটা নয়। বদলে বয়ান পাল্টানোর জন্য পুলিশের চাপও সহ্য করতে হয়েছে। এই অবস্থায় ভীত-সন্ত্রস্ত দলিত পরিবারটি হাথরসের গ্রামে আর থাকার সাহস পাচ্ছে না।
উনিশ বছরের ওই তরুণীর দাদা শনিবার জানান, তাঁরা সপরিবার দিল্লীতে শিফট করে সেখানে থেকেই ন্যায়বিচার আদায়ে লড়াই চালিয়ে যেতে চান। তাঁর কথায়, “নিরাপত্তার কারণেই আমরা হাথরসে আর থাকতে চাই না।” হাথরসের নির্যাতিতা পরিবারের আইনজীবী সীমা কুশওয়াহ (যিনি নির্ভয়া কাণ্ডেও দোষীদের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন) এলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চে জানিয়েছেন, ধর্ষণ-খুনের মামলাটি উত্তরপ্রদেশের বাইরে সরানোর অনুমতি দেওয়া হোক। নিরাপত্তা নিয়ে ভয় পাচ্ছে পরিবারটি। মামলা চলাকালীন হাথরসের নির্যাতিতার পরিবারের জন্য নিরাপত্তারক্ষী দেওয়ার আর্জিও জানান তাঁদের আইনজীবী। সীমা বলেন, “হাথরসের নির্যাতিতার পরিবার চাইছে, মামলাটি দিল্লী অথবা মুম্বই- উত্তরপ্রদেশের বাইরে যে কোনও জায়গায় সরিয়ে দেওয়া হোক।”
প্রসঙ্গত, ১৪ সেপ্টেম্বর হাথরসের ওই তরুণী গণধর্ষণের শিকার হন। উচ্চবর্ণের চার ব্যক্তি তাঁক ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। পৈশাচিক অত্যাচারের জেরে ২৯ সেপ্টেম্বর দিল্লীর সফদরজং হাসপাতালে মারা যান ওই দলিত তরুণী। অভিযোগ ওঠে, ওই রাতেই পরিবারের সম্মতি ছাড়া পুলিশ জোর করে মৃত তরুণীর দেহ সত্কার করে। পরিবারের লোকজনকে অবধি সেখানে থাকতে দেওয়া হয়নি। এমনকী শেষবারের মতো তাঁরা মেয়েকে দেখতেও পাননি। সত্কার করার সময় পরিবারটিকে ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হয়েছিল। হাইকোর্টে এ জন্য ভর্ৎসনার মুখেও পড়তে হয় যোগী সরকারকে।