সপ্তাহ দুয়েক আগেই দিল্লীর সফদর জং হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে চার উচ্চবর্ণের ব্যক্তির হাতে গণধর্ষণের শিকার হওয়া হাথরসের দলিত মহিলা। যা নিয়ে এখনও তোলপাড় গোটা দেশ। প্রশ্নের মুখে উত্তরপ্রদেশের নারী সুরক্ষা। তবে তাতেও থেমে নেই যোগী রাজ্যে লজ্জা। এবার ফের এক শিউরে ওঠার মত ঘটনা ঘটল সেখানে। হাথরসে উনিশের তরুণীর ঘটনার সঙ্গে মিল রয়েছে এই ঘটনারও। বুধবার রাতে বাড়ির অদূরেই একটি চাষের খেত থেকে বছর আঠারোর ওই যুবতীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। হাত দড়িতে বাঁধা ছিল। অটোপসি রিপোর্টে পুলিশ নিশ্চিত খুনের আগে ধর্ষণ করা হয়েছে দলিত পরিবারের মেয়েটিকে। ঘটনাটি ঘটেছে লখনউ থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে, উত্তরপ্রদেশের বারাবঙ্কি জেলার সাতরিখ থানা এলাকার টিপরি গ্রামে।
মেয়েটির বাবা অভিযোগপত্রে জানান, বুধবার বিকেল ৪টে নাগাদ মেয়ে জমিতে গিয়েছিল ফসল কাটতে। অন্ধকার নামলেও মেয়ে ঘরে না-ফেরায় সন্দেহ হয়। ওকে খুঁজতে জমিতে গিয়ে দেখি মেয়ে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দুটো হাত দড়িতে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা ছিল। পরনের পোশাক ছিল অবিন্যস্ত। ছেঁড়া। জমি থেকে উদ্ধার করে, স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে ওই তরুণীকে মৃত ঘোষণা করা হয়। পুলিশকেও ঘটনার খবর দেওয়া হয়। পোস্টমর্টেম রিপোর্টের উল্লেখ করে পুলিশ জানিয়েছে, দলতি তরুণীকে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে। ধর্ষণের পর তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। এদিকে মৃত তরুণীর বাবা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমার টাকা-পয়সা, ক্ষতিপূরণ লাগবে না। এই টাকা, ক্ষতিপূরণ আমার মেয়েকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিতে পারবে না। আমি একমাত্র ন্যায়বিচার চাই। দোষীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমার শান্তি নেই।’
বারাবঙ্কির পুলিশ সুপার অরবিন্দ চতুর্বেদী জানান, এফআইআরে দলিত তরুণীকে ধর্ষণ-খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলার নিষ্পত্তিকে পুলিশের একাধিক টিম গঠন করা হয়েছে। মেয়েটির পরিবার সংবাদমাধ্যমকে জানায়, বুধবার রাতে অর্ধনগ্ন অবস্থায় মেয়েকে তাঁরা উদ্ধার করেছিলেন। সংজ্ঞা ছিল না। পরনের পোশাকের অবস্থা দেখেই সন্দেহ হয়েছিল, মেয়েকে যৌন নিগ্রহ করা হয়েছে। পুলিশের ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও ধর্ষণের কথা বলা হয়েছে। এফআইআরে প্রথমে খুনের ধারা দেওয়া হলেও পরে অটোপসির রিপোর্টের ভিত্তিতে ধর্ষণের ধারা যোগ করা হয়। পুলিশ সন্দেহভাজন ২ জনকে গ্রেফতারও করেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামে উত্তেজনা তৈরি হলে, পুলিশ পিকেট বসানো হয়। স্বভাবতই এই ঘটনায় হাথরস কাণ্ডের মতই অস্বস্তিতে পড়েছে যোগী সরকার।