মোদী সরকার উপত্যকার মানুষের কাছ থেকে অসাংবিধানিক এবং অগণতান্ত্রিক ভাবে যা কেড়ে নিয়েছে, তা ফিরিয়ে দিতেই হবে। প্রায় ১৪ মাস পর গত মঙ্গলবার বন্দীদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর এক ভিডিও বার্তায় এমন কথাই শুনিয়েছিলেন পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি।আর তারপরই হাত মেলালো একদা যুযুধান দুই দল। ৩৭০ ধারা বিলুপ্তির প্রতিবাদে জম্মু-কাশ্মীরের একদা ক্ষমতাসীন দুই দল মেহবুবার পিডিপি এবং ন্যাশনাল কনফারেন্স উভয়ে বৃহস্পতিবার জোট ঘোষণা করল। তাঁদের জোটে হাত মেলালেন পিপলস কনফারেন্সের নেতা সাজ্জাদ লোনও। রয়েছে অন্যান্য ছোট দলও। নতুন জোটের নাম দেওয়া হয়েছে – পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গুপকার ডিক্লেয়ারেশন। রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়া ৩৭০ ধারা ফেরানোর দাবিতে এই জোট এবার থেকে বড়সড় আন্দোলনে নামবে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা।
প্রসঙ্গত, ২০১৯-এর ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ – দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করে দেওয়ার আইন পাশ হয় সংসদে। কিন্তু কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত প্রথম থেকেই মেনে নিতে পারেনি ন্যাশনাল কনফারেন্স। ফারুক আবদুল্লারা কেন্দ্র বিরোধী সুর চড়িয়েছিলেন। তবে তারপরই রাজ্যবাসীর সুরক্ষার স্বার্থ দেখিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতিকে প্রথমে গৃহবন্দী, পরে আটক করে বন্দী শিবিরে রাখা হয়েছিল। বর্ষীয়ান ফারুক আবদুল্লা অবশ্য গৃহবন্দীই ছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা হয়েছিল জাতীয় নিরাপত্তা আইন। একবছরের কাছাকাছি সময়ে বন্দী থাকার পর মুক্তি পেয়েছিলেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা। মেহবুবা মুফতি তখনও বন্দীশিবিরে। তাঁর মুক্তির দাবিতে সরব হন মেয়ে। শেষমেশ ১৪ মাস পর দিন দুই আগে তিনি মুক্তি পান।
মেহবুবা মুফতি বাড়ি ফেরার পর গুপকর রোডের বাড়িতে মেহবুবার সঙ্গে দেখা করতে যান ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা এবং তাঁর ছেলে ওমর। তখনই জল্পনা উসকেছিল, তাহলে কি যুযুধান দুই রাজনৈতিক শিবিরের মধ্যে বন্ধুত্ব দানা বাঁধছে। ৪৮ ঘণ্টা না কাটতেই তা সত্যি হয়ে গেল। জানা গিয়েছে সেদিন মেহবুবার কুশল সংবাদ জানার পাশাপাশি বৃহস্পতিবর গুপকর ডিক্লেরেশনে স্বাক্ষরকারী সব দলের বৈঠকে মেহবুবাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তাঁরা। এবার সেই বৈঠকেই আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করল ‘পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গুপকর ডিক্লেরেশন’। বৃহস্পতিবার ফারুক আবদুল্লার নেতৃত্বে রাজ্যের সবক’টি মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলের মধ্যে হওয়া ওই বৈঠকে একজোট হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এবার থেকে পিডিপি-এনসি-পিসি সবাই লড়বেন ৩৭০ ধারা ফেরানোর দাবিতে।