এই দেশজোড়া করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই পুরোপুরিভাবে রেলের বেসরকারিকরণের জন্য একের পর এক ধাপ পেরিয়ে চলেছে মোদী সরকার। বেসরকারি ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল আগেই। এবার আরও এক বড় সংস্কারের পথে হাঁটল ভারতীয় রেল। সেমি হাইস্পিড ট্রেনে থাকবে শুধুই এসি কোচ। আর রাখা হবে না কোনও দ্বিতীয় শ্রেণীর নন এসি স্লিপার কোচ। ইতিমধ্যেই নয়া এসি কোচ বানানোর কাজ শুরু হয়েছে কপূরথালা রেল ফ্যাক্টরিতে। আপাতত লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে ১০০ কোচ বানানোর। ২০২৩ সালের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া পুরোপুরি বলবৎ হয়ে যাবে।
অন্যদিকে গোটা দেশ জুড়ে ১৯৬ জোড়া যে ফেস্টিভ্যাল স্পেশাল ট্রেন চালানো হবে, সেখানেও জোনাল রেলওয়েকে বলা হয়েছে বেশি মাত্রায় এসি থ্রি টিয়ার কোচ রাখতে। নন এসি স্লিপার কোচের তুলনায়, ভাড়া বেশি এসি কোচের। রেলের পরিকল্পনা অনুযায়ী নতুন এসি থ্রি টিয়ার কোচে আসন সংখ্যা বাড়ানো হবে। ৭২ আসনের বদলে থাকবে ৮৩ আসন। ফলে যাত্রী সংখ্যা বাড়বে। বেশি যাত্রী মানে, বেশি সংখ্যার টিকিট। রেলের হিসেব অনুযায়ী প্রতি ট্রেনে ২০০ করে অন্তত যাত্রী বাড়বে। সেই অনুযায়ী টিকিটের দাম ধার্য হয়ে যাবে।
প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে হাওড়া, শিয়ালদহ থেকে দিল্লি ও দিল্লি-মুম্বাই এই রুটেই কোচে বদল আনা হবে। রেল মন্ত্রকের আধিকারিকদের বক্তব্য, এই পথে বছরের একটা বড় সময়ে ১৩০ কিমি/ঘন্টায় ট্রেন দৌড়লে সাধারণ নন এসি স্লিপার কোচে ধুলো-বালি ঢুকে পড়ে। এসি কোচ হলে সেটা আর ঢোকার সুযোগ নেই। ২০২৩ সালের মধ্যে প্রায় ১৯০০ মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেনের গতি ১৩০কিমি/ঘন্টা করতে চায় রেল।আর এই গতি করতে গেলে স্লিপার কোচে তা আর সম্ভব হবে না। তবে অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের আদৌ এতে কোনও উপকার হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
যদিও রেল আধিকারিকদের মতে, এসি কোচে ভাড়া বেশি হবে, নন এসি স্লিপার কোচের তুলনায়। কিন্তু বর্তমান এসি কোচের তুলনায় একটু কম হবে। ফলে মানিয়ে নিতে খুব অসুবিধা হবে না যাত্রীদের। তবে ভারতের মতো দেশে, যেখানে দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রীদের একটা বড় অংশ গরিব এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত, সেখানে এই ধরনের সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই এ হেন ‘তুঘলকি’ সিদ্ধান্তের সমালোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে একাধিক মহলে।