দীর্ঘ প্রায় ৩ বছর পর বিজেপিতে পদ পেয়েছেন মুকুল রায়। হয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি। কিন্তু শিকে ছেঁড়েনি মুকুল পুত্র শুভ্রাংশুর। পদ পেয়ে খুশি হয়েছেন বাবা। কিন্তু নাখুশ ছেলে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখলেন, রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছাবসর নিলে কেমন হয়? যা নিয়ে বিজেপি-র অন্দরে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।
বিজেপি-র স্থানীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি দলীয় একটি বৈঠকে তাঁকে না-ডাকায় এবং বিভিন্ন ভাবে তাঁকে ‘খাটো’ করার চেষ্টায় ক্ষুব্ধ শুভ্রাংশু। দলের এক স্থানীয় নেতা এদিন বলেন, ‘শুভ্রাংশু আবেগতাড়িত হয়ে ওই পোস্ট করে ফেলেছে। কয়েকদিন আগে দলের কোনও একটা বৈঠকে ওকে ডাকা হয়নি। সেটা নিয়ে ও ক্ষুব্ধ। তা ছাড়া, দলের অন্দরে ওকে নিয়ে কয়েকজন বিরূপ মন্তব্যও করেছে সম্প্রতি। সে কারণে ওর ক্ষোভ আরও বেড়েছে। ওর বয়স কম। তাই আবেগতাড়িত হয়ে ও ফেসবুকে ওই পোস্ট করে ফেলেছে। আমাদের ধারনা, বিষয়টা মিটে যাবে। দলের তরফে ওর সঙ্গে যোগাযোগেরও চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের আশা, ওকে বুঝিয়ে শান্ত করা যাবে।’
ওই নেতা যা-ই বলুন, এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ করা ওই ফেসবুক পোস্ট বিকাল পর্যন্ত শুভ্রাংশুর প্রোফাইলে রয়েছে। দলের তরফে সেই পোস্ট তুলে নেওয়ার জন্য তাঁকে অনুরোধ করা হবে কি না, সে বিষয়ে অবশ্য কোনও নেতা আলোকপাত করতে পারেননি।
প্রসঙ্গত, সক্রিয় রাজনীতি করার পাশাপাশিই শুভ্রাংশু একাধিক সংস্থার কর্ণধারও বটে। ফেসবুকে তাঁর ‘ফলোয়ার’-এর সংখ্যা ৩০ হাজারের কাছাকাছি। ফলে তাঁর ওই পোস্ট যে ইতিমধ্যেই বহু মানুষ দেখেছেন বা পড়েছেন, তা স্পষ্ট। যা থেকে এই উপসংহারে পৌঁছনোও অসম্ভব নয় যে, এর ফলে বিজেপি যথেষ্ট ‘অস্বস্তি’-তে পড়ল। এমনিতেই উত্তর ২৪ পরগনায় মণীশ শুক্ল খুনের ঘটনায় প্রকাশ্যেই বিজেপি-র অন্দরে গোষ্ঠীলড়াইয়ের অভিযোগ করতে শুরু করেছে শাসক তৃণমূল। শুভ্রাংশুর এই ফেসবুক পোস্টে দলীয় কোন্দলের সেই অভিযোগ আরও জলবাতাস পাবে বলেই ধারনা বিজেপি-র একাংশের। পাশাপাশিই, এর ফলে অস্বস্তিতে পড়তে পারেন মুকুল নিজেও। দলের কেন্দ্রীয় পদাধিকারীর বিুধায়ক পুত্র স্বেচ্ছাবসরের প্রসঙ্গ তুললে সেটি তাঁর পক্ষেও যথেষ্ট বিড়ম্বনার কারণ বৈকি!