সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রকে ঋণগ্রহীতাদের সাহায্য করার জন্য কোনও উপায় বের করার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। আর তারপরই দু’কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণের ওপরে সুদ মকুব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মোদী সরকার। এবং সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য সরকার সময় চেয়েছিল এক মাস। কিন্তু বুধবার শীর্ষ আদালত সরকারকে নির্দেশ দিল, ২ নভেম্বরের মধ্যে সুদ মকুবের সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ গতকাল কেন্দ্রকে প্রশ্ন করে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে তা কার্যকর করতে এত সময় লাগবে কেন?
বেঞ্চের অন্যতম সদস্য বিচারপতি এম আর শাহ বলেন, ‘সাধারণ মানুষ এ বছর দেওয়ালি পালন করবে কিনা, তা স্থির করবে সরকার।’ পরে তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন। যাঁরা দু’কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ নিয়েছেন, তাঁদের নিয়ে আমাদেরও চিন্তা হচ্ছে।’ প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাস ঠেকাতে দেশ জুড়ে যে লকডাউন জারি করা হয়েছিল, তাতে অনেকেই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাঁদের অনেকে এখনই ঋণ শোধ করতে পারছেন না। তাঁদের স্বার্থে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যই সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে সরকারকে।
উল্লেখ্য, গত মার্চে করোনা অতিমহামারীর জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ঋণ শোধের ওপরে তিন মাসের মোরাটোরিয়াম ঘোষণা করে। পরে তার মেয়াদ ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এর মধ্যে ঋণগ্রহীতাদের তরফে সুপ্রিম কোর্টে কয়েকটি পিটিশন জমা পড়ে। তাতে সুদের ওপরে ছ’মাসের মোরাটোরিয়াম জারি করার আর্জি জানানো হয়েছিল। সেই আবেদনের ভিত্তিতে সেপ্টেম্বর মাসে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে বলে, ঋণগ্রহীতাদের সাহায্য করার জন্য কোনও উপায় ভাবতে হবে।
বুধবারেই সরকারের ঘোষণা করার কথা ছিল, কীভাবে মোরাটোরিয়ামের সময়সীমা বাড়ানো হবে, সুদ মকুব করা হবে এবং অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রকে কীভাবে রিলিফ দেওয়া হবে। সুদ মকুব করলে অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়বে, তা জানার জন্য তৈরি হয়েছিল মহর্ষি কমিটি। সেই কমিটির বিভিন্ন সুপারিশের ওপরেও গতকাল সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সরকার আদালতের কাছে ১৫ নভেম্বর অবধি সময় চায়। তবে বিচারপতি অশোক ভূষণ, বিচারপতি আর সুভাষ রেড্ডি ও বিচারপতি এম আর শাহকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দেয়, ‘আমাদের মতে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য এক মাস সময় লাগা উচিত নয়। এত দেরি করলে সাধারণ মানুষের স্বার্থ রক্ষা হবে না।’