কাপড়ের ক্যানভাসের সামনে তুলি হাতে বসে শিল্পী। নাম শেখ আজিজুল। লাল, নীল, সাদা, কালো, হলুদ, সবুজ রঙে নিপুন হাতে তিনিই মা দুর্গাকে ফুটিয়ে তুলছেন পটচিত্রে। তাঁর সঙ্গী পার্থসারথী মণ্ডল, অপূর্ব নন্দী, কাজল মণ্ডল, অরূপ সিং, বিভাস সাউ-রা। সকলেই এখন মগ্ন ঐতিহ্যবাহী পটচিত্রে। বর্ধমানের এই ছবিই প্রমাণ করে যে, সাম্প্রদায়িক শক্তি যতই চেষ্টা করুক, বাংলায় সম্প্রীতি আর সৌভ্রাতৃত্বের বন্ধন এখনও অটুট।
প্রতিবছরই বর্ধমান শহরের পুজোয় থিমের ছড়াছড়ি থাকে। বিগ বাজেটের সব পুজোই একে অপরকে টেক্কা দেয়। তবে এবার সেই আড়ম্বর নেই। কিন্তু তার মধ্যেও ছিমছাম থিমের পুজো হচ্ছে। বর্ধমানের একটি মণ্ডপে এবার ফিরছে হারাতে বসা লোকশিল্প পটচিত্র। মেদিনীপুর আর উড়িষ্যার একাংশেই যা এখন সীমাবদ্ধ হয়ে রয়েছে। সেই পটচিত্র ফুটিয়ে তুলতে ব্যস্ত রয়েছেন শিল্পীরা। যাঁরা সকলেই বর্ধমান শহরের বাসিন্দারা। এই শিল্পীর দলেই রয়েছেন শেখ আজিজুল।
বর্ধমানের দুবরাজদিঘির বাসিন্দা আজিজুল। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন দেবদেবীর পটচিত্রের কাজ করছেন। সরাসরি জিজ্ঞেস না করলেও কোনও সমস্যা হয় না? এই প্রশ্নে হেসে ফেলেন শিল্পী। বলেন, “শিল্পীর আবার সমস্যা কী। আমি শিল্পী, ছবি আঁকতে ভালবাসি, তাই পটচিত্র আঁকছি।” এখানকার আর এক শিল্পী পার্থসারথী মণ্ডল জানান, লাল্টু স্মৃতি সংঘের থিম পটচিত্র। তারই কাজ করছেন তাঁরা। তিনি বলেন, “করোনাকালে সকল লোকশিল্পীই সঙ্কটে পড়েছেন। যাঁরা ঐতিহ্যকে বহন করেন সেই সব শিল্পীদের রক্ষা করতে পারলে ঐতিহ্যও রক্ষা পাবে। তাই পটশিল্পকে আমরা এবারের থিম করেছি।”