সরকারি ভাবে ২০০৫ সাল থেকে দোতলা বাস শহরের পথ থেকে তুলে দেওয়া হয়েছিল। সেই হিসেব করলে প্রায় দেড় দশক বছর পরে ফের শহরের রাস্তায় দোতলা বাস দেখা যাবে। তবে জনপরিবহণের জন্য নয়, দোতলা বাস ফিরছে পর্যটনের আকর্ষণ হিসেবে। এবং সম্পূর্ণ নতুন চেহারায়। বহু স্মৃতি উস্কে সরকারের উদ্যোগে ফের কলকাতার পথে ফিরছে দোতলা বাস।
আগামিকাল, মঙ্গলবার নবান্ন থেকে দু’টি বাসের যাত্রার সূচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সেই বাঘ-মুখ আঁকা লোগো আর লাল রং নয়, দোতলা বাস ফিরছে নীল-সাদা রঙে। অত্যাধুনিক সাজে। জনপরিবহণ নয়, অনেকটা লন্ডন সিটি ট্যুরের আদলে কলকাতায় ঘোরার জন্য আসছে হুড খোলা দোতলা বাস। পুরোদস্তুর অত্যাধুনিক বাসগুলিতে থাকছে সিসিটিভি, প্যানিক বাটন, অটোম্যাটিক দরজা, ডেস্টিনেশন বোর্ড। বাসের ভিতরে থাকছে ছাদে ওঠার সিঁড়ি। মোট আসন ৫১টি, এর মধ্যে দোতলায় ১৭টি।
ভারত স্টেজ ফোর গোত্রের এই নতুন বাস নির্মাণ করেছে জামশেদপুরের সংস্থা বেবকো। বাসের ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ রোড ট্রান্সপোর্ট। দু’টি বাসের জন্য খরচ পড়েছে ৯০ লক্ষ টাকা। বাস দু’টি কিনেছিল পশ্চিবঙ্গ পরিবহণ নিগম।
গত মার্চে কেন্দ্রের থেকে ছাড়পত্র এনে বাস দু’টি নিগমের হাতে তুলে দেয় বেবকো। তখন ঠিক ছিল পর্যটক টানতে নিউ টাউনে বাস দু’টি চালাবে পরিবহণ নিগমই। লকডাউনে নিগমের ডিপোয় বাসগুলি রাখা ছিল। সম্প্রতি নবান্ন সিদ্ধান্ত নেয়, পরিবহণ নিগম নয়, পর্যটন বিকাশের লক্ষ্যে পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন কর্পোরেশন এই বাস চালাবে।
কর্পোরেশনরে চেয়ারম্যান ও মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করার পরে ভাড়া এবং কোথা থেকে বুকিং করতে হবে- সব তথ্য জানিয়ে দেব। আমরা কলকাতার পর্যটনকে আকর্ষণীয় করতে একটি ট্রামও চেয়েছিলাম। সেটি আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।’
কলকাতায় প্রথম দোতলা বাস নামে ১৯২৬ সালে। চলে কালীঘাট থেকে শ্যামবাজার। খুব দ্রুত তা জনপ্রিয়তা পায়। ধীরে ধীরে দোতলা শহরের পরিবহণের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে ওঠে। জড়িয়ে যায় কলকাতার ঐতিহ্যের সঙ্গে।