অতিমারি আবহেও ফাঁক নেই উৎসবের প্রস্তুতিতে। এই উৎসব পালন করতে গিয়েই পারস্পরিক দূরত্ব-বিধি উড়িয়ে জনসমাগমে করোনা সংক্রমণ বাড়বে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা। আজ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনও বললেন, ‘‘জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পুজো-পার্বণে যোগ দেওয়ার নির্দেশ কোনও ধর্ম বা ঈশ্বর দেননি। এ-ও বলেননি, প্রার্থনা করার জন্য মণ্ডপ, মন্দির বা মসজিদে যেতে হবে।’’ তাঁর পরামর্শ, মেলা বা জমায়েত এড়িয়ে উৎসবের দিনগুলি প্রিয়জনের সঙ্গে বাড়িতেই পালন করুন।
ওনাম পরবর্তী কেরালা বা পুজোর বাজারে মেতে ওঠা পশ্চিমবঙ্গ যার হাতে-গরম উদাহরণ। পরিস্থিতি যাতে হাতের বাইরে বেরিয়ে না-যায়, তার জন্য দেশবাসীর কাছে করজোড়ে আবেদন রাখলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। তাঁর অনুরোধ, কেউ যেন বেশি ভিড়ে না-যান। উৎসবের মধ্যেও করোনা সতর্কতা মেনে চলেন। ‘কোনও ধর্ম বা ভগবান উৎসব সাড়ম্বরে পালনের কথা বলেনি’, এই মন্তব্য করে বাড়িতে বসেই পুজো উদ্যাপনের পক্ষে সওয়াল করেছেন হর্ষ। তাঁর মতে, ভিড়ভাট্টা হলে বড় বিপদের মুখে পড়তে হতে পারে। সাম্প্রতিক জেলা সফরে বেরিয়ে পইপই করে মাস্ক পরার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, আজ দেশে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ৭০ লক্ষের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৭৪ হাজার ৩৮৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আশঙ্কা, খুব শীঘ্রই সংক্রমণের বিচারে শীর্ষে থাকা আমেরিকাকে ছুঁয়ে ফেলবে ভারত। এই অবস্থায় আসন্ন উৎসবের মরসুমে দেশবাসীকে সাবধান করতে হর্ষ বর্ধন বলছেন, ‘‘বিশ্বাস বা ধর্মের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের জন্য দলে দলে উৎসবে যোগ দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। সেটা হলে আমরা কিন্তু অনেক বড় বিপদে পড়ব। কৃষ্ণ বলেছিলেন, নিজের লক্ষ্যে মনোনিবেশ কর। আমাদের এখন লক্ষ্য করোনাকে পরাস্ত করে মানবজাতিকে রক্ষা করা। এটাই আমাদের ধর্ম। এটাই গোটা বিশ্বের ধর্ম।’’
অভিজ্ঞতা বলছে, কেরলে ওনাম উৎসবের পরেই করোনা সংক্রমণ মাত্রা ছাড়ায়। সেই দৃষ্টান্ত মাথায় রেখে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘ধর্মের থেকে কর্মের গুরুত্ব কি বেশি নয়? উৎসব পালন করতে গিয়ে কি জীবন বাজি রাখা উচিত? কোনও ধর্মীয় নেতাই সে নির্দেশ দেননি। বাইরে আগুন জ্বলছে জেনেও ধর্মের নামে সেই আগুনেই ঝাঁপ দিয়ে বিপদ ডাকলে এ সব উৎসবের যুক্তি কী?’’