হাথরস, বলরামপুরের ঘটনা দেশে নারী নিরাপত্তার বাস্তব ছবিটা আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। ক্রমবর্ধমান ধর্ষণ এবং নৃশংসতা এবার আন্তর্জাতিক ফোরামেও অস্বস্তি বাড়াল ভারতের। হাথরাস এবং বলরামপুরের ঘটনা জাতীয় রাজনীতির গণ্ডি পেরিয়ে আকর্ষণ করেছে রাষ্ট্রসংঘের দৃষ্টিও। খোদ রাষ্ট্রসংঘের রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর এই দুই ঘটনার উদাহরণ টেনে ভারতে নারী নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘হাথরস এবং বলরামপুরের ঘটনা আরও একবার মনে করিয়ে দিল ভারতে মহিলারা এখনও পিছিয়ে। আর লিঙ্গবৈষম্যের ভিত্তিতে হিংসার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা তাঁদেরই বেশি।’
রাষ্ট্রসংঘের আধিকারিকের এই মন্তব্য যে আন্তর্জাতিক মহলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্বল করবে না, তা চোখ বন্ধ করে বলে দেওয়া যায়। আর সেটা বুঝতে পেরেই সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রসংঘের আধিকারিকের এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছে ভারত। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘রাষ্ট্রসংঘের রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা নিয়ে কিছু অযাচিত মন্তব্য করেছেন। তাঁর জানা উচিত, সরকার এই ধরনের ঘটনাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। আর এই ধরনের ইস্যুতে বাইরের কোনও এজেন্সির কাছে কোনও মন্তব্য প্রত্যাশিত নয়।’
বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বলছেন, ‘এই ঘটনাগুলিতে তদন্তপ্রক্রিয়া এখনও চলছে। সুতরাং, এ বিষয়ে রাষ্ট্রসংঘের রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটরের মন্তব্য একেবারেই অপ্রত্যাশিত এবং অযাচিত। তাই এসব না বলাই ভাল। ভারতের সংবিধান প্রত্যেক নাগরিককে সমান অধিকার দেয়। ভারত এমন একটা গণতন্ত্র যার কিনা দেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য সুবিচারের বন্দোবস্ত করার দীর্ঘ ইতিহাস আছে।’ বিদেশমন্ত্রকের এই বক্তব্যে স্পষ্ট, হাথরাস বা বলরামপুরের ঘটনায় কোনওরকম বিদেশি হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করবে না সরকার। যদিও খোদ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এই ঘটনার পরবর্তীকালে যে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ হচ্ছে, তার পিছনে বিদেশি শক্তির ‘হাত’ দেখছেন।