হাতে আর এক মাসও বাকি নেই। আগামী ৩ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আমেরিকায়। তবে তার আগেই করোনায় সংক্রমিত হয়ে খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট তথা রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প হাসপাতালে। এমনিতেই অভিযোগ যে, ট্রাম্প করোনা মোকাবিলায় খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না। সে কারণেই এই মহামারী আমেরিকা জুড়ে এতটা ছড়িয়ে পড়েছে। সেই ধারণাই আরও জোরদার হয়েছে, তিনি নিজে সংক্রমিত হওয়ায়। সংখ্যাগরিষ্ঠ আমেরিকানই মনে করছেন, করোনাকে যথোচিত গুরুত্ব দিলে তিনি হয়ত এই বিপদ এড়াতে পারতেন, তাঁকে সংক্রমিত হতে হত না। এই ধারণার প্রভাব পড়েছে জনমত সমীক্ষাতেও। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স ও ইপসোস-এর সমীক্ষার ফল রবিবার প্রকাশিত হয়েছে। তাতে ট্রাম্পের চেয়ে প্রায় দশ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বিডেন।
প্রসঙ্গত, ট্রাম্প বহুদিন ধরেই করোনা সংক্রমণকে হাল্কা করে দেখিয়েছেন। এমনও বলেছিলেন যে, এই ভাইরাসের প্রকোপ নিজে থেকেই কমে যাবে। ‘মাস্ক’ পরায় প্রতিদ্বন্দ্বী জো বিডেনকে গত সপ্তাহে উপহাসও করেন। অথচ তিনি তো বটেই করোনার আক্রমণে লক্ষ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত, অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। স্কুল-কলেজ-বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ। এই আবহে ৩ নভেম্বর নির্বাচন। নথিভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক ভোটারদের মধ্যে ৫১ শতাংশ বিডেনকে সমর্থন করছেন বলে জনমত সমীক্ষায় প্রকাশ। সেখানে ট্রাম্পের পক্ষে মাত্র ৪১ শতাংশ। এখনও সিদ্ধান্ত নেননি ৪ শতাংশ। বাকি ৪ শতাংশ তৃতীয় কোনও দলের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। গত কয়েক মাস ধরেই বিভিন্ন সমীক্ষায় ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন বিডেন। কিন্তু সেই ব্যবধান এই শেষ মুহূর্তের সমীক্ষায় আরও এক-দু’পয়েন্ট বেড়ে গেল।
আরও একটা উল্লেখযোগ্য বিষয় উঠে এসেছে জনমত সমীক্ষায়। করোনা নিয়ে উদ্বিগ্ন অধিকাংশ মার্কিন নাগরিকই। তার মধ্যেও ৬৫ শতাংশ ভোটার মনে করেন, ট্রাম্প করোনা মহামারীকে ঠিক মতো গুরুত্ব দিলে নিজে সংক্রমিত হতেন না। তাঁদের মধ্যে যেমন ডেমোক্র্যাট সমর্থক রয়েছেন, রিপাবলিকান বা ট্রাম্প অনুরাগী কম নেই। মাত্র ৩৪ শতাংশ মনে করেন, করোনা নিয়ে ট্রাম্প যা বলেছেন, তা সত্যি। মিথ্যা বলেছেন বলে মনে করেন ৫৫ শতাংশ। করোনা মোকাবিলায় ট্রাম্পের ভূমিকায় অখুশি ৫৭ শতাংশ, যা গত সপ্তাহের সমীক্ষা থেকে ৩ শতাংশ বেশি। অধিকাংশ মানুষ মনে করেন, নাগরিকদের নিরাপত্তা বজায় রাখতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচার কাটছাঁট করা হোক। সশরীরে নির্বাচনী সভা বন্ধের পক্ষে ৬৭ শতাংশ। ট্রাম্প সুস্থ হয়ে ওঠা পর্যন্ত প্রেসিডেনশিয়াল ডিবেট বন্ধের পক্ষে ৫৯ শতাংশ।