যোগী রাজ্যে নারীসুরক্ষার হাল যে ক্রমশই আরও খারাপ হচ্ছে প্রতিদিন, বারবারই মিলছে তাঁর প্রমাণ। কখনও উন্নাওয়ের আসিফা-কাণ্ড বা বিজেপি বিধায়কের বাড়ি চাকরি চাইতে যাওয়া কিশোরীকে নিগ্রহ, তো কখনও আবার তরুণীকে গণধর্ষণ বা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হাতে আইনের ছাত্রীর শ্লীলতাহানী-ধর্ষণ — এমনই নানা ঘটনার জেরে বারবারই খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে উত্তরপ্রদেশ। এই করোনা পর্বেও বজায় রয়েছে সেই ধারা। নির্ভয়ার স্মৃতি উস্কে হাথরস গণধর্ষণকাণ্ড নতুন করে যোগী সরকারের মুখ পুড়িয়েছে। যোগীর পুলিশের বিরুদ্ধেই উঠেছে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করার অভিযোগ।
গভীর রাতে তড়িঘড়ি কেন নির্যাতিতার দেহ সত্কার করা হল, সে প্রশ্নে জেরবার যোগী প্রশাসন। এর অনেক আগে থেকেই অবশ্য একাধিক ধর্ষণের ঘটনায় উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিলেন বিরোধীরা। হাথরসের ঘটনার পর প্রিয়াঙ্কা গান্ধী মন্তব্য করেন, যোগী সরকার ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। ঘটনা এখানেই শেষ হয়। বলরামপুর আর এক দলিত কন্যাকে গণধর্ষণের খবর বুধবার রাতেই সামনে আসে। ধর্ষকদের নির্মম অত্যাচারের জেরে গভীর রাতেই তিনি মারা যান। এর পরেও মাটি খুঁড়ে কেচো বের করার মতো একে একে বেরোচ্ছে আরও ধর্ষণের ঘটনা। মঙ্গলবার রাতে উত্তরপ্রদেশের আজমগঢ় ও বুলন্দশহরে ধর্ষণের শিকার হয়েছে আরও দুই নাবালিকা।
এদিকে, যোগীর জন্য মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) অভিশপ্ত একটা দিন হয়ে থাকবে। কারণ, হাথরসের উনিশের তরুণী দিল্লীর হাসপাতালে মারা গিয়েছেন মঙ্গলবার। বলরামপুরের বাইশের দলিতকন্যার মৃত্যুও মঙ্গলবার। ফলে মঙ্গলেই বিজেপির জন্য অমঙ্গলের আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। এমনকী বিজেপির অন্দরেও সেই আশঙ্কা দৃঢ় হচ্ছে। হাথরসে ১৯ বছরের দলিত কন্যার ধর্ষণ-খুনে যে চার জনের নাম সামনে এসেছে, তার উচ্চ জাতের ব্যক্তি। ফলে এই ঘটনাকে কেন্দ্রে করে, জাতপাতের রাজনীতির প্রভাব পড়তে পারে পড়শি বিহারের নির্বাচনে। দুই রাজ্যে ক্ষমতায় থাকা বিজেপি নেতারাই এই আশঙ্কা করছেন।