প্রমাণের অভাবে বাবরি মসজিদ ধ্বংসে অভিযুক্ত প্রত্যেককেই বেকসুর মুক্তি দিয়েছে সিবিআই-এর বিশেষ আদালত৷ ২৮ বছর আগে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময় যিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব ছিলেন, সেই প্রাক্তন আমলা মাধব গোডবোলে কিছুতেই এই রায় মানতে পারছেন না৷ বাবরি ধ্বংসের জন্য কোনও আগামষড়যন্ত্র হয়নি, তা বিশ্বাস করেন না প্রাক্তন এই আইএএস অফিসার৷
সিবিআই-এর বিশেষ আদালতের রায়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে মাধব গোডবোলে জানিয়েছেন, ‘এই রায় দেখেআমি খুবই অবাক হয়েছি৷’ সিবিআই আদালতের বিচারক সুরেন্দ্র কুমার যাদব জানিয়েছেন, বাবরি মসজিদধ্বংসের ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত নয় এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷ গোডবোলে বলেন, ‘অত বিপুলসংখ্যক মানুষ আগাম পরিকল্পনা ছাড়া স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে জড়ো হয়েছিলেন, তা একেবারেই বিশ্বাসযোগ্য নয়৷ ২৮ বছর পরে যদি এমন রায় দেওয়া হয়, তাহলে তা আমাদের দেশের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা নিয়েই প্রশ্ন তোলে৷ কারণ সুপ্রিম কোর্টই এই ঘটনাকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করেছিল৷ তার পরেও সিবিআই আদালত কোনও প্রমাণ পেল না, এটা আমার বিশ্বাস হচ্ছে না৷’
অবসর নেওয়ার পর নিজের বইতে মাধব গোডবোলে দাবি করেছিলেন, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রসচিব হিসেবে ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বরের ঘটনা রুখতে একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছিলেন তিনি৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পি ভি নরসিমহা রাও-কে সংবিধানের ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করে বাবরি মসজিদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছিল৷ যদিও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সেই প্রস্তাবে সায় দেননি৷
সেই প্রসঙ্গে মাধব গোডবোলে জানিয়েছেন, নরসিমহা রাও সেই সময়ে এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্তই নিতে পারেননি৷ প্রাক্তন এই আমলার মতে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কাছে হয়তো ৩৫৬ ধাকা প্রয়োগ করার পরামর্শ রাজনৈতিক ভাবে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি৷ বাবরি ধ্বংসের পর অযোধ্যায় ঘটনাস্থলেও গিয়েছিলেন মাধব গোডবোলে৷ এ দিনের রায় দেখে তিনি বলেছেন, ‘আদালত প্রায় ৫০০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছে৷ তার পরেও কোনও ষড়যন্ত্রের প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷ এটাই আমার কাছে সবথেকে আশ্চর্যের৷’