প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে নিজের পিঠ বাঁচাতে ‘পরম বন্ধু’ ভারতকে ঢাল করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন মুলুকের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিপক্ষ জো বিডেনের আক্রমণের কার্যত ধরাশায়ী হন তিনি। ঠিক সেই মুহূর্তে ভারত-চীন-রাশিয়ার বিরুদ্ধে করোনা সংক্রান্ত তথ্য গোপনের অভিযোগ আনলেন ট্রাম্প।
নভেম্বরে ভোটের আগে তিনদফায় সরাসরি বিতর্কে অংশ নেবেন প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীরা। ভারতীয় সময় বুধবার সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ প্রথমবার বিতর্কে মুখোমুখি হলেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বিডেন। মোট ছটি ইস্যুতে বিতর্ক হয়। এর মধ্যে রয়েছে, দু’জনের কাজের খতিয়ান, সুপ্রিম কোর্ট, কোভিড-১৯, দেশের অর্থনীতি, বর্ণবিদ্বেষ ও হিংসা এবং ভোটে কারচুপি। উত্তপ্ত বিতর্ক সভায় ট্রাম্পকে মিথ্যেবাদি, জোকার বলে কটাক্ষ করেন বিডেন। পালটা রাশিয়ার হাতের পুতুল বলে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন ট্রাম্প। বিতর্কে উঠে আসে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কর ফাঁকি প্রসঙ্গও। অভিযোগ খণ্ডন করে তাঁর দবি, তিনি লক্ষ-লক্ষ টাকা কর মিটিয়েছেন। বরং বিডনের ছেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনলেন ট্রাম্প। সবমিলিয়ে প্রথম বিতর্কসভাই ছিল উত্তপ্ত। যা দেখে নভেম্বরে ভোটের আঁচ এখনই টের পাওয়া যাচ্ছে।
নির্বাচন মার্কিন মুলুকে অথচ বারবার নাম জড়াচ্ছে ভারতের। কখনও প্রেসিডেন্টের প্রচারের ভিডিওতে স্থান পেয়েছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী, তো কখনও ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিসের স্মৃতিচারণায় উঠে এসেছে ভারতের নাম। দেশের প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কেও ভারতকে টেনে আনলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সরাসরি বিতর্কসভায় ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বিডেন বলেন, “আমেরিকায় ৭০ লাখ মানুষ করোনা ভাইরাসের কবলে। মহামারী রুখতে প্রেসিডেন্টের কোনও পরিকল্পনাই নেই।” ট্রাম্পকে মিথ্যেবাদী তকমা দিয়ে বিডেন বলেন, “ট্রাম্প যা বলছেন সব কিছু মিথ্যে। সবাই জানেন উনি মিথ্যেবাদী। আপনাদের মধ্যে কতজন আজ সকালে উঠে দেখেছেন, ঘরের একটা চেয়ার খালি কারণ কেউ কোভিডে মারা গিয়েছেন?”
এই আক্রমণের জবাব দিতে গিয়েই চিরাচরিতভাবে চিনকে টেনে আনেন ট্রাম্প। তবে এবার একই আসনে বসালেন ভারত ও রাশিয়াকেও। বললেন, “এটা চিনের দোষ। চীন, ভারত কোনও দিন আপনাকে সঠিক তথ্য দেবে না। আপনি জানেন না চিনে কোভিডে কতজনের মৃত্যু হয়েছে।” ট্রাম্পের ব্যাখ্যা, এই দুই দেশ তথ্য গোপন করেছে বলে আমেরিকার মৃত্যুর সংখ্যা এত বেশি বলে মনে হচ্ছে। তবে শুধু করোনা নিয়ে নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয় বলতে গিয়েও ভারতের কথা টানলেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, চীন-রাশিয়া-ভারত বাতাসকে দূষিত করছে।