কেন্দ্রের অধীনে থাকা অর্ডিনান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড বিগত ছয় বছর ধরে যেই পরিমাণ টাকায় বিপজ্জনক রকমের ত্রুটিপূর্ণ সামরিক সম্ভার সেনাবাহিনীকে সরবরাহ করেছে, সেই টাকায় ১০০ টি মাঝারি কামান হয়ে যেত বলে ভারতীয় সেনাবাহিনী একটি রিপোর্টে জানিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে’তে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৪ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে অত্যন্ত বিপজ্জনক ও ত্রুটিপূর্ণ অস্ত্রসম্ভার ওএফবি থেকে কেনার জন্য ৯৬০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর রিপোর্টে বলা হয়েছে, “৯৬০ কোটি টাকায় ১০০টি ১৫০ মিমি’র মাঝারি কামান কেনা যেত।”
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অন্তর্গত প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত উৎপাদন বিভাগের নিয়ন্ত্রনাধীন অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড পৃথিবীর মধ্যে সর্বাধিক পুরনো সরকার নিয়ন্ত্রিত উৎপাদন সংস্থা যাদের শাখা ছড়িয়ে রয়েছে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন জায়গায়। এই সংস্থাই ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য গোলাবারুদ তৈরি করে। সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক রিপোর্টে ওএফবি’র উৎপাদিত ২৩ মিমি এয়ার ডিফেন্স গোলা, কামানের গোলা, ১২৫ মিমি ট্যাঙ্ক রাউন্ডস ও বিভিন্ন ক্যালিবারের রাইফেলের গুলির মান নিয়ে সম্প্রতি সমালোচনা করা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর রিপোর্টে ওএফবি’র নিম্নমানের উৎপাদন নিয়ে বিশেষ করে বলা হয়েছে। এই নিম্নমানের জন্য যে শুধু অর্থের অপচয় হয়েছে তাই নয়, ত্রুটিপূর্ণ সমরাস্ত্রের জন্য মানুষের প্রাণ পর্যন্ত নষ্ট হয়েছে বলে উল্লেখ করা আছে রিপোর্টে। ‘’দায়িত্বের অভাব এবং উৎপাদিত সামগ্রীর নিম্নমান ঘনঘন দুর্ঘটনার কারণ হয়েছে। এর ফলে সৈনিকরা আহত হয়েছেন এমনকি মৃত্যুও হয়েছে। গড়ে প্রতি সপ্তাহে একটি করে দুর্ঘটনা ঘটে’’ বলে জানানো হয়েছে রিপোর্টে।
২০১৪ সালের পর থেকে ত্রুটিপূর্ণ সমরাস্ত্রের জন্য ৪০৩টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। ২০১৪ সালে ১১৪ টি দুর্ঘটনার জায়গায় ২০১৭ সালে দুর্ঘটনা ঘটে ৫৩টি। ২০১৮ সালে সেটি বেড়ে হয় ৭৮ এবং ২০১৯ সালে দুর্ঘটনার সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১৬টি। কিন্তু মৃত্যুর সংখ্যাটি যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।