যোগী রাজ্যে নারীসুরক্ষার হাল যে ক্রমশই আরও খারাপ হচ্ছে প্রতিদিন, বারবারই মিলছে তাঁর প্রমাণ। কখনও উন্নাওয়ের আসিফা-কাণ্ড বা বিজেপি বিধায়কের বাড়ি চাকরি চাইতে যাওয়া কিশোরীকে নিগ্রহ, তো কখনও আবার তরুণীকে গণধর্ষণ বা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হাতে আইনের ছাত্রীর শ্লীলতাহানী-ধর্ষণ — এমনই নানা ঘটনার জেরে বারবারই খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে উত্তরপ্রদেশ। এই করোনা পর্বেও বজায় রয়েছে সেই ধারা।ওবার যেমন ১৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে হার মানলেন উত্তরপ্রদেশের ‘গণধর্ষিতা’ মহিলা।
ওই ঘটনা মনে করিয়ে দিয়েছে আট বছর আগে দিল্লীতে নির্ভয়া গণধর্ষণের স্মৃতি। এই মহিলাকেও গণধর্ষণের পাশাপাশি তাঁর ওপর নৃশংস অত্যাচার চালায় দুষ্কৃতীরা। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের জওহরলাল নেহেরু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (জেএনএমসি)-এ চিকিৎসা চলছিল তাঁর। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সোমবার স্থানান্তরিত করা হয় দিল্লীর সফদর জং হাসপাতালে। সেখানেই মঙ্গলবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। দলিত সম্প্রদায়ের ওই মহিলাকে ধর্ষণের ঘটনায় চার অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃত চার জনই উচ্চবর্ণের।
জেএনএমসি হাসপাতালের চিকিৎসকদের সূত্রে খবর, ধর্ষণে বাধা দেওয়ায় নির্মম অত্যাচার চালানো হয়েছে মহিলার ওপর। প্রচণ্ড মারধর করা হয়েছে। শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টাও করে দুষ্কৃতীরা। মুখমণ্ডলে একাধিক জায়গা, জিভে কামড়ের গভীর ক্ষত। শিরদাঁড়া ও ঘাড় মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। অসাড় ছিল দুই পা এবং একটি হাত। আইসিইউ-তে রেখে সব রকম চেষ্টা চালানো হচ্ছিল। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সিদ্ধান্ত হয় দিল্লীর হাসপাতালে পাঠানোর।
নির্যাতিতার ভাই বলেন, ‘গত ১৪ সেপ্টেম্বর হাথরস এলাকায় বাড়ির কাছেই একটি জমিতে মা ও আমার সঙ্গে জমিতে ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন দিদি। বিকেলের দিকে আমি বাড়িতে চলে আসি। মায়ের থেকে কিছুটা দূরে ছিলেন দিদি। সেই সময় পিছন থেকে দিদিকে আক্রমণ করে কয়েক জন দুষ্কৃতী। গলায় ওড়না পেঁচিয়ে টানতে টানতে একটি বাজরা খেতের মধ্যে নিয়ে গিয়ে নৃশংস অত্যাচার চালায় ও গণধর্ষণ করে। পরে মা খুঁজতে খুঁজতে দিদিকে উদ্ধার করেন অচৈতন্য অবস্থায়।’ যোগীর পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘পুলিশ প্রথমে আমাদের কোনও কথাই শুনতে চায়নি। দ্রুত পদক্ষেপ করেনি। ঘটনার চার-পাঁচ দিন পর তদন্ত শুরু করেছে।’