উত্তরবঙ্গের ৩৭০টি চা বাগানের গৃহহীন শ্রমিকদের জন্য নতুন প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রকল্পের নাম রাখা হয়েছে ‘চা সুন্দরী’। শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক বৈঠকের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চা বাগানের যেসব শ্রমিকদের নিজ বাড়ি নেই তাঁদের বাড়ি বানিয়ে দেবে সরকার। ‘চা সুন্দরী’ প্রকল্পে ইতিমধ্যে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আগামী ২ মাসের মধ্যে কাজ শুরু হবে। তিন বছরের মধ্যে প্রকল্প সম্পূর্ণ করা হবে।’
সরকারি হিসাব অনুযায়ী উত্তরবঙ্গে ৩৭০টি চা বাগানে প্রায় ৩ লক্ষ শ্রমিক রয়েছে। মূলত যাঁদের বাড়ি নেই তাঁদের এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, ‘প্রথম পর্যায়ে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের মোট ৭টি চা বাগানের ৩,৬৯৪টি পরিবার এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। তার মধ্যে আলিপুরদুয়ারে ৫টি চা বাগানের ২,৬৪১ টি পরিবার রয়েছে। আর জলপাইগুড়িতে ২টি চা বাগানে ১,০৫৩টি পরিবার থাকছে।’ চা শ্রমিকদের দীর্ঘ দিনের এই দাবি ছিল বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
প্রশাসনিক বৈঠকের প্রথম দিন আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। এদিন ১৩০ জন কেএলও আন্দোলকারী ও লিংকম্যান রাজ্যের উদ্যোগে মূল স্রোতে ফিরে এসেছেন। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে বাকি ১৬১ জন আগামীকাল ফিরবেন। রাজ্য সরকার এঁদের বিশেষ কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাছাড়া এদিন মুখ্যমন্ত্রী জল্পেশ মন্দিরের পুরোহিত বিজয় চক্রবর্তীর হাতে ভাতা তুলে দিয়ে রাজ্য পুরোহিত কল্যান প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। রাজ্য আগেই জানিয়েছিল, এই প্রকল্পে ১০০০ টাকা ভাতা ছাড়া বাড়ির জন্য ১লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে পুরোহিতদের। মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের ২৩টি জেলায় ১৮,৩১১টি মন্দির চিহ্নিত করা হয়েছে। সম্প্রতি সরকার সমীক্ষা করে এই তথ্য জানতে পেরেছে। এছাড়া ১৮,২২৩ জন পুরোহিত ভাতা পাওয়ার যোগ্য বলেও জেনেছে সরকার। মমতা জানিয়েছেন, ‘পুরোহিত ভাতা পাওয়ার জন্য বয়সের কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।’
এদিন কামতাপুরি ভাষা ও সংস্কৃতি উন্নয়নকল্পে কামতাপুরি ভাষা অ্যাকাডেমির পক্ষে অতুল রায়ের হাতে ৫ কোটি অনুদান তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বক্সাদুয়ারফোর্ট সংস্কারের জন্য ৫ কোটি টাকা দিয়েছেন। রাজবংশী ভাষা প্রসারের জন্যও অনুদান দেওয়ার কথা বুধবার।