গত রবিবার কৃষি বিল নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছিল রাজ্যসভা। বিরোধী-সহ শিরোমণি অকালি দল, বিজেডি, ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টি এবং টিআরএস দলের আপত্তি উড়িয়ে ধ্বনিভোটে বিল পাশ করিয়ে নিয়েছিল মোদী সরকার। আর তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে অসংসদীয় আচরণের দায়ে ৮ জন বিরোধী সাংসদকে বাদল অধিবেশন পর্বের জন্য সাসপেন্ড করেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু। কিন্তু সে সময়ই তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন জানিয়েছিলেন, নিয়ম মেনেই বিলটিকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর জন্য ‘ডিভিশন’ চাওয়া হয়েছিল। রুল বুক ছেঁড়ার মতো কাজ তিনি করেননি। এবার তাঁর বক্তব্যই সত্যি বলে প্রমাণিত হল। সংসদে কৃষি বিল পাশের সময় বিরোধীদের অবস্থান নিয়ে মিথ্যা বলছে কেন্দ্রীয় সরকার। এমনকী, রাজ্যসভা টিভির ভিডিও ফুটেজ সামনে আসায় অস্বস্তিতে পড়েছেন ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিং।
রাজ্যসভায় বিরোধীদের বক্তব্য ছিল, দেশের ৮০ শতাংশ মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর নির্ভরশীল কৃষি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিল ধ্বনিভোটে পাশ হবে কেন? ভোটাভুটি মঞ্জুর হবে না কেন? সরকারের জবাব, বিরোধীরা সভার বিধি মানেননি। ভোটাভুটি চাওয়ার সময় তাঁরা নিজেদের আসনে ছিলেন না। বরং ওয়েলে নেমে, রুল বুক ছিঁড়ে হট্টগোলে মেতে ছিলেন। ঘটনার দিনই ডেরেক জানিয়েছিলেন, নিয়ম মেনেই বিলটিকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর জন্য ‘ডিভিশন’ চেয়েছিলেন বিরোধী সাংসদরা। ডেপুটি চেয়ারম্যান তাতে কর্ণপাত না করেই ধ্বনিভোটে বিল পাশ করাচ্ছিলেন। তার প্রতিবাদেই ওয়েলে নেমেছিলেন বিরোধীরা। তাছাড়া তিনি ‘রুল বুক’ ছেঁড়েননি বলেও জোর গলায় দাবি করেছিলেন।
এক ইংরেজি দৈনিক ও টিভি চ্যানেল রবিবার তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সেদিন রাজ্যসভা টিভির ফুটেজ যা দেখাচ্ছে, তার সঙ্গে মিল নেই ডেপুটি চেয়ারম্যান তথা কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্যের। দেখা গেছে, ডেপুটি চেয়ারম্যান যখন ধ্বনিভোটে বিল পাশ করাচ্ছেন, তখনও তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন, সিপিএমের কে কে রাগেশ, ডিএমকে–র তিরুচি শিবা নিজের আসনে থেকেই ভোটাভুটির দাবি জানাচ্ছেন। এর ফলে স্বভাবতই মুখ পুড়েছে কেন্দ্রের। ডেরেক জানিয়েছেন, ‘সরকারের অধীনে থাকা রাজ্যসভা টিভির ফুটেজই সরকারের মুখোশ খুলে দিয়েছে।’ এ নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন যুব তৃণমূল সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এক টিভি চ্যানেলের প্রতিবেদন পোস্ট করে টুইটে তাঁর বক্তব্য, ‘সংসদে জনপ্রতিনিধিদের যেভাবে দমিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে তা সকলেই দেখছেন, জানছেন। কিন্তু একদিন প্রতিবাদীরা জেগে উঠবেই। এখনই দেশ জুড়ে প্রতিবাদের বন্যা বইছে। মোদিজী এই ব্যাপক প্রতিবাদকে দমাবেন কীভাবে?’