এই মুহূর্তে নারী নির্যাতন এবং অপরাধমূলক কার্যকলাপে দেশের মধ্যে একেবারে উপরের সারিতেই রয়েছে যোগীরাজ্য। নারী নিরাপত্তা নিয়ে এর আগে একাধিকবার প্রশ্ন উঠেছে সেখানে। এবার উত্তরপ্রদেশে ফের দিনেদুপুরে এক দলিত যুবতীকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করল চার দুষ্কৃতী। শুধু তাই নয়, কেটে নেওয়া হল তাঁর জিভও। ওই যুবতী এখন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। ধর্ষকদের অত্যাচারে গোটা শরীর ক্ষতবিক্ষত। শরীরের বহু হাড় ভেঙে গিয়েছে। অথচ, এ হেন নৃশংসতার পরও নাকি পুলিশ ৪-৫ দিন চুপ ছিল। পরে স্থানীয়দের বিক্ষোভের জেরে তারা ব্যবস্থা নিয়েছে। সেই চারজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সূত্রের খবর, ওই ৪ ব্যক্তিই উচ্চবর্ণের। ফলে ফের জাতপাত নিয়ে বিভেদ মাথাচাড়া দিয়েছে সেখানে।
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের হাথরাস জেলায়। নির্যাতিতার ভাইয়ের দাবি, মূল ঘটনাটি ১৪ সেপ্টেম্বরের। সেদিন মা এবং ভাইয়ের সঙ্গে মাঠে ফসল কাটতে গিয়েছিলেন বছর কুড়ির ওই দলিত যুবতী। কিছুক্ষণ বাদে ফসলের বোঝা মাথায় নিয়ে বাড়ি ফিরে যান নির্যাতিতার ভাই। তখনও মা-মেয়ে বাজরার ক্ষেতে ছিলেন। দুজন দু’প্রান্তে ফসল কাটছিলেন। হঠাৎ করে চার-পাঁচ জন দুষ্কৃতী এসে তরুণীর গলায় তাঁরই ওড়না পেঁচিয়ে দেয়। তারপর টেনে হিঁচড়ে তাঁকে সেখান থেকে নিয়ে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর মেয়েকে দেখতে না পেয়ে সন্ধান করা শুরু করেন মা। অনেকক্ষণ খোঁজার পর বেশ কিছুটা দূরে মেয়েকে অচেতন অবস্থায় পান তিনি। তারপরই তড়িঘড়ি সেখানকার এক সরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ওই নির্যাতিতা। তাঁকে আরও বড় হাসপাতালে স্থানান্তর করার প্রয়োজন পড়তে পারে। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট। একাধিক হাড় ভাঙা, গোটা শরীরে ক্ষতচিহ্ন। ধর্ষণেরও প্রমাণ মিলেছে। নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, তাঁকে ধর্ষণ করার পর বেধড়ক মারধর করা হয়। অথচ, পুলিশে খবর দিলে প্রথম চার-পাঁচ দিন তারা কোনও পদক্ষেপই করেনি। পরে বিক্ষোভের জেরে সেই চারজনকে গ্রেফতার করেছে। এখন প্রশ্ন উঠছে, যে উত্তরপ্রদেশে রামরাজ্য প্রতিষ্ঠার দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, সেই রাজ্যে নারী নিরাপত্তার এই হাল কেন? উত্তর অধরা।