বিগত ১ সপ্তাহ ধরেই গোটা দেশজুড়ে কেন্দ্রের নয়া কৃষি বিল নিয়ে বিরোধী দলগুলি-সহ কৃষকদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছিল। আর এরমধ্যেই সংসদে পাশ হওয়ার তিনটি কৃষি বিলে সই করলেন দেশের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এর ফলে আইনে পরিণত হল জুন মাসে কেন্দ্রের জারি করা সেই তিনটি বিল। গত সপ্তাহে সংসদে নজিরবিহীন বিক্ষোভ-হইহট্টগোলের মধ্যে ধ্বনি ভোটে পাশ হওয়া বিলে সই না করার জন্য রাষ্ট্রপতিকে আর্জি জানিয়েছিলেন বিরোধীরা। শনিবারই এনডিএ ছেড়ে যাওয়া শিরোমণি অকালি দলও একই আর্জি জানিয়েছিল। কিন্তু কোনও সেই আবেদনে সাড়া দিল না রাষ্ট্রপতি ভবন।
ঠিক এক সপ্তাহ আগে গত রবিবার রাজ্যসভায় দু’টি কৃষি বিল ঘিরে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল রাজ্যসভা। ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি ডেপুটি চেয়ারম্যানের টেবিলের সামনে গিয়ে তিনটি মাইক্রোফোন ভেঙে দেওয়া এবং রুল বুক ছেঁড়ার অভিযোগ উঠেছিল বিরোধী সাংসদদের বিরুদ্ধে। তার জেরে আট সাংসদ সাসপেন্ড হয়ে ধর্নায় বসেছিলেন। প্রতিবাদে রাজ্যসভা বয়কট করেন বিরোধী সাংসদরা। বিরোধীশূন্য রাজ্যসভাতেই পাশ হয়ে যায় তৃতীয় কৃষি বিলটিও।
বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় গায়ের জোরে বিল পাশ করিয়েছে মোদী সরকার। তাঁরা ভোটাভুটির দাবি করলেও ডেপুটি চেয়ারম্যান তা না মেনে ধ্বনি ভোটে পাশ করিয়ে দেন গত রবিবারের ওই দু’টি বিল। বিল পাশের ক্ষেত্রে সংসদীয় রীতি মানা হয়নি বলেও অভিযোগ ছিল কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম-সহ বিরোধী দলগুলির। আর সেই যুক্তিতেই রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখে বিলে সই না করে সংসদে ফেরানোর আর্জি জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু রাষ্ট্রপতি তাতে কর্ণপাত করলেন না। কৃষক স্বার্থবিরোধী এই বিলগুলি আইনে পরিণত করায় এদিন রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন বিরোধীরা।
প্রসঙ্গত, শুধু সংসদেই নয়, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলিতে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা। প্রতিবাদে পথে নেমেছে বাংলাও। আজ রবিবারও বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ-অবরোধ হয়েছে। এই তিনটি কৃষি বিলের কারণেই এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছে জোটের সবচেয়ে পুরনো শরিক পঞ্জাবের শিরোমণি অকালি দল। ফলে কিছুটা হলেও চাপে রয়েছে মোদী সরকার। তার মধ্যে তিনটি কৃষি বিলে সই করে সম্মতি জানালেন রাষ্ট্রপতি।