গত মার্চ মাসের শেষে লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই বন্ধ রয়েছে গোটা দেশের প্রেক্ষাগৃহ-সহ বিনোদনের বিভিন্ন ক্ষেত্রগুলি। জুন মাসে আনলক পর্ব চালু হলেও সংক্রমণের আশঙ্কায় এত দিন ওই জায়গাগুলি খোলার অনুমতি মেলেনি। তবে এবার সেই অনুমতি মিলল। আগামী ১ অক্টোবর থেকে বাংলায় যাত্রা, নাটক, থিয়েটার, চলচ্চিত্র ইত্যাদি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু করার অনুমতি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে ওই দিন থেকেই সঙ্গীতানুষ্ঠান, নৃত্যানুষ্ঠান, আবৃত্তির মতো অনুষ্ঠানও চালানো যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে এর পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ রুখতে নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বাংলার আগে অন্য কোনও রাজ্য এই ছাড়পত্র দিয়েছে কি না তা মনে করতে পারছেন না কেউই। গতকাল রাতে টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ১ অক্টোবর থেকে যাত্রা, নাটক, মুক্তমঞ্চে থিয়েটার, চলচ্চিত্র, সঙ্গীতানুষ্ঠান, নৃত্যানুষ্ঠান, আবৃত্তি এবং জাদু প্রদর্শনী শুরু করা যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে কয়েকটি শর্তও বেঁধে দিয়েছেন তিনি। প্রথমত, এমন অনুষ্ঠান চালানোর ক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ৫০ জন বা তার কম হতে হবে। দ্বিতীয়ত, শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে অনুষ্ঠান করতে হবে। তৃতীয়ত, মাস্ক পরা-সহ অন্যান্য বিধিও কড়াভাবে মানতে হবে।
ভিড়ের কারণে যাতে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে না পারে, সেই আশঙ্কায় এবার পুজোয় কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে না বলে দিন কয়েক আগেই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সরকারের সেই নির্দেশে রুজি-রুটি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন শিল্পীদের একটি বড় অংশ। ফেসবুকেও সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আরম্ভ করার আবেদন জানিয়েছিলেন বাংলার প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী লোপামুদ্রা মিত্র। তারপর দিনই মুখ্যমন্ত্রীর এহেন নির্দেশ মিলতেই কার্যত ভীষণ খুশি শিল্পীরা।
লোপামুদ্রা বললেন, ‘‘গতকাল শুটিংয়ের ফাঁকে আবেগপ্রবণ হয়ে দিদিকে মনের কথা লিখেছিলাম। তাঁকে ট্যাগও করি। এক রাতের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই নির্দেশ দেখে নতুন করে আবেগে ভাসছি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ সঙ্গীত দুনিয়াকে নতুন অক্সিজেন দিল। আমি ভীষণ খুশি।’’ মমতার এই পদক্ষেপে উচ্ছ্বসিত সঙ্গীতশিল্পী অনুপম রায়। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘রাতারাতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এভাবে আমাদের ডাকে সাড়া দেবেন ভাবতেই পারিনি। অতিমারি সঙ্গীত দুনিয়ার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ছোটবড় সমস্ত মানুষের উপার্জনেও থাবা বসিয়েছে। আমি পারলে কাল থেকেই কোমর বেঁধে নেমে যাই। তবে সব নিয়ম মেনে, গুছিয়ে নিতে যতটা সময় লাগে, সেটা তো সকলকে দিতেই হবে।’’