রাজ্যসভায় পাস হয়ে যাওয়ার পর থেকেই কৃষি বিলকে কেন্দ্র করে কার্যত রণক্ষেত্রে চেহারা নিয়েছে গোটা দেশ। একদিকে যেমন তুমুল বিক্ষোভ আন্দোলনে নেমেছেন পাঞ্জাব, হরিয়ানার কৃষকরা। তেমনি অনৈতিকভাবে বিল পাস করানোর পাশাপাশি একে কৃষকের মৃত্যু পরোয়ানা বলে দাবি করা হয়েছে বিরোধীদের তরফে। তবে সেসবে আমল না দিয়ে কৃষি বিলের পর এর মধ্যেই সংসদে শ্রম বিলও পাস করিয়ে নিয়েছে মোদী সরকার। যে শ্রম বিধিকে এবার শ্রমিকবিরোধী তকমা দিয়ে মোদী সরকারকে নিশানা করলেন রাহুল গান্ধী। প্রশ্ন তুললেন কর্মী ছাঁটাইয়ের রাস্তা প্রশস্ত করা নিয়ে। এই একই অভিযোগে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরাও বিঁধলেন কেন্দ্রকে।
বৃহস্পতিবার রাহুলের টুইট করে বলেন, ‘চাষীদের পরে এ বার আক্রমণ শ্রমিকদের ওপরে। গরিবকে শোষণ, ‘মিত্র’কে শোষণ— এটিই মোদীজির ভারত।’ বক্তব্যে আমজনতাকে প্রায়শই ‘মিত্রো’ বলে সম্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু সেই বন্ধু সম্বোধন যে আসলে মেকি, সেটাই দেখাতে চেয়েছেন রাহুল। টুইটের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত নতুন শ্রম বিধি পাশের খবর। যে বিধি অনুযায়ী, ৩০০ জন পর্যন্ত কর্মীর সংস্থায় শ্রমিক ছাঁটাই কিংবা ব্যবসা গোটানোর জন্য সরকারি অনুমতি আর লাগবে না। এখন যে সংখ্যা ১০০।
ইতিমধ্যেই বিষয়টির তীব্র সমালোচনা করছে সরকার-বিরোধী সমস্ত ট্রেড ইউনিয়ন। অভিযোগ, এতে আরও মসৃণ হল অবাধ ছাঁটাই এবং মর্জি মাফিক ব্যবসা বন্ধের রাস্তা। এ দেশে ৩০০ কিংবা তার কম কর্মীর সংস্থা ৭০ শতাংশ। সেখানে কাজ করেন ৭৪ শতাংশ কর্মী। এঁদের চাকরির আর কোনও নিরাপত্তা রইল না। এমনকী সঙ্ঘের কর্মী সংগঠন বিএমএস-ও দাবি করেছে, এই বিধির বহু অংশ শ্রমিক স্বার্থের পরিপন্থী। এতে এক তরফা ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়েছে মালিক এবং আমলাদের হাতে। এ প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর কটাক্ষ, ‘এই কঠিন সময়ে যাতে কারও কাজ না-যায়, তা নিশ্চিত করাটা জরুরি ছিল। কিন্তু বিজেপি সরকার এমন আইন এনেছে, যাতে ছাঁটাইয়েরই সুবিধা হয়! বাহ্ রে সরকার। সহজ করে দিয়েছ অত্যাচার।’