করোনা সংক্রমণের জেরে দীর্ঘদিন ধরে চলা লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বহু মানুষ। সাধ্যমত তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকার। এবার আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বাংলার হস্তশিল্পীদের পাশেও দাঁড়াতে ‘সৃষ্টিশ্রী উৎসব’ চালু করার সিদ্ধান্ত নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আগামী ২ অক্টোবর ঢাকুরিয়ায় সৃষ্টি ভবনে এই উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। সেই ‘সৃষ্টিশ্রী উৎসব’-এ কী কী পাওয়া যাবে?
সূত্রের খবর, বাংলার ধনেখালি-ফুলিয়ার তাঁতের শাড়ি, বিষ্ণুপুরী বালুচরি, গারোয়াল, তসর সিল্ক, পাঞ্জাবি, ডোকরা, টেরাকোটা, কাগজের গয়না-সহ বাংলার হস্তশিল্পীদের হাতে বানানো বিভিন্ন জিনিসপত্র সেখানে পাওয়া যাবে। সাধারণ মানুষ যাতে হস্তশিল্পীদের জিনিসপত্রগুলি কিনতে আগ্রহী হন, সেই কারণেই পুজোর উপহার হিসেবে প্রতিটি জিনিসের উপর ২০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে।
তবে শুধু হস্তশিল্প নয়, সেখানে থাকবে বাঙালির প্রিয় ইলিশ। থাকবে গলদা চিংড়িও। ১৪৭০ টাকা কিলো দরে সেই উৎসবে ইলিশ মাছ পাওয়া যাবে। গলদা চিংড়ি পাওয়া যাবে ৭০০ টাকা কিলোয়। এছাড়াও মিলবে তুলাইপাঞ্জি, লক্ষণভোগ, গোবিন্দ ভোগ-সহ সুস্বাদু চাল ও দেশি ঘি। এর পাশাপাশি পাওয়া যাবে পিঠে পুলি, কচুরি, আলুরদম, তন্দুর-সহ বিভিন্ন ধরনের ফ্রাই। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের এর জন্যে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে উদ্যোক্তাদের তরফে।
জানা গিয়েছে, ‘সৃষ্টি ভবনে’ প্রতিটি জেলার স্টল রয়েছে। সেখানে মোট ২৪টি স্থায়ী স্টল আছে। নীচের পার্কিং লটে আরও ১৬টি নতুন স্টল বানানো হবে। সিএডিপি প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত পঞ্চায়েত দফতরের আধিকারিক সৌম্যজিৎ দাস জানিয়েছেন, অক্টোবরের ২ তারিখ থেকে ভাইফোঁটা পর্যন্ত এই উৎসব চলবে। পঞ্চায়েত দফতরের অধীনস্ত সিএডিপি বিভাগই এই উৎসবের আয়োজন করছে।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী, দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়ায় গড়ে তোলা হয় ওই হস্তশিল্প কেন্দ্র। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের আনন্দধারা প্রকল্পের অধীনে বিভিন্ন পঞ্চায়েতে যে সমস্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠী কাজ করছে, এখানে মিলবে তাঁদের নির্মিত সেইসমস্ত সামগ্রী। শাড়ি, ব্যাগ, গয়না, ঘর সাজানোর জিনিস, মসলন্দ মাদুর, ছো মুখোশ, ডোকরা, তামার প্রদীপ, বাবুই ঘাস ও খেজুর পাতার ম্যাট-ট্রে প্রভৃতি।