গোটা ক্রিকেট দুনিয়াকে হতবাক করে গতকাল আকস্মিক প্রয়াণ হয়েছে প্রাক্তন অস্ট্রেলিয়ান তারকা ডিন জোন্সের। মাত্র ৫৯ বছর বয়সে তিনি যে এভাবে সবাইকে অবাক করে দিয়ে চলে যাবেন, তা কেউই ভাবতে পারেননি। সূত্রের খবর, গতকাল সকাল ১১টা নাগাদ ব্রেকফাস্ট সেরে জোন্স আইপিএল সম্প্রচার সংক্রান্ত এক ব্রিফিং সেসনে উপস্থিত ছিলেন। দক্ষিণ মুম্বইয়ের যে হোটেলে তিনি ছিলেন, তার বারন্দাতেই তিনি পরে সহকর্মীদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। উপস্থিত সকলকে স্তম্ভিত করে দিয়ে জোন্স হঠাৎই পড়ে যান। তড়িঘড়ি তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্সে করেই হরকিষনদাস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পৌঁছতেই চিকিৎসকরা জোন্সকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
জোন্সের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ এবং হতবাক গোটা ক্রিকেটমহল। ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি জোন্সের মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করেছেন। শোকপ্রকাশ করেছেন ক্রিকেটবিশ্বের আরও বহু মানুষ। শোকবার্তা জানিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াও। ভিভিয়ান রিচার্ডস টুইট করেছেন, “হরিব্ল নিউজ টু ওয়েক আপ। তুমি নিছক আমার বিরুদ্ধে খেলা একজন প্লেয়ার ছিলে না। তুমি ছিলে আমার বন্ধু, আমার ভাই। পৃথিবীতে যেখানে যেখানে ক্রিকেট খেলা হবে, তোমার উপস্থিতি আর তোমার হাসি মিস্ করবে ক্রিকেটপ্রেমীরা। রেস্ট ইন পিস ডিনো ম্যান।”
প্রসঙ্গত, ১৯৮৪ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে অভিষেক হয়েছিল জোন্সের। সেই বছরেরই মার্চ মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট ক্রিকেটে আত্মপ্রকাশ হয় তাঁর। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বমোট ৫২টি টেস্ট খেলেছেন। সংগ্রহ করেছেন ৩,৬৩১ রান। টেস্টে তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ১১টি সেঞ্চুরি। পাশাপাশি, ১৬৪টি ওয়ান ডে ম্যাচ খেলে রান ৬,০৬৮। সেঞ্চুরি ৭টি। ১৯৮৮-৮৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্টে কেরিয়ারের সর্বোচ্চ ২১৬ রান করলেও ১৯৮৬ সালে চিপকে ভারতের বিরুদ্ধে ২১০ রানের কালজয়ী ইনিংস খেলেছিলেন জোন্স। সেই ইনিংসের জন্যই তিনি উপমহাদেশে সম্যক পরিচিত এবং বিখ্যাত।
ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর তাঁর আবির্ভাব হয়েছিল ধারাভাষ্যকার হিসেবে। মাঠে নেমে কোন দল কী স্ট্র্যাটেজি নেবে, মূলত তা আগে থেকে অনুমান করার চেষ্টা করতেন জোন্স। পাশাপাশিই, কোন ক্রিকেটারের কোথায় কী ভুল হয়েছে, তা-ও ধরিয়ে দিতেন। তাই অনুষ্ঠানে একটা সময় তাঁর নামই হয়ে গিয়েছিল ‘প্রফেসর ডিনো’। এবার মুম্বইয়েও এসেছিলেন আইপিএলের ম্যাচ নিয়ে বিশেষজ্ঞের মতামত দিতে। যে দেশের মাটিতে তিনি অমর দ্বিশতরানের ইনিংস খেলেছিলেন, সেখানেই সকলকে হতবাক করে শেষ হয়ে গেল জোন্সের জীবনের ইনিংস।