করোনা পরিস্থিতির জেরে হঠাৎ লকডাউন ঘোষণায় কত পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ি ফেরার পথে মারা গিয়েছেন, কত ডাক্তার-নার্সদের মতো করোনা যোদ্ধাদের মৃত্যু হয়েছে, কত আশাকর্মীরা এই সংকটের সময় কাজ করে চলেছেন, কত পড়ুয়ারাই বা আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন – এমন আরও বহু প্রশ্নের কোনও উত্তর নেই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে।
ইতিমধ্যে ২০টি বিষয় চিহ্নিত করা গিয়েছে, যে বিষয়গুলি নিয়ে কেন্দ্র জানিয়ে দিয়েছে, তাঁদের কাছে এ বিষয়ে কোনও নথি বা পরিসংখ্যান নেই। অথচ দেশের নিরিখে সরকারের কাছে এই তথ্যগুলি থাকা অত্যন্ত জরুরি। স্বাভাবিক কারণেই কেন্দ্রের এই তথ্য না রাখা কি নিজেদের অস্বস্তি বা ব্যর্থতা ঢাকারই কোনও কৌশল? প্রশ্ন তুলছে বিরোধী দলগুলি।
যে যে বিষয়গুলিতে কোনও তথ্যই নেই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সেগুলি হল – কতজন করোনা যোদ্ধা মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত? দেশের এই সংকটময় সময়ে যাঁরা নিজেদের প্রাণ বাজি রেখে কাজ করে চলেছেন, সেই ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের কতজন মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, এ বিষয়ে কোনও সামগ্রিক তথ্যই নেই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে।
কতজন করোনা যোদ্ধা মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত? সেপ্টেম্বর মাসেই স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অশ্বিনী চৌবে লিখিত উত্তরে জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এ বিষয়েও কোনও তথ্য নেই।
করোনার আক্রমণের পর কত অঙ্গনওয়ারি কর্মীর কাজ চলে গিয়েছে? সেপ্টেম্বর মাসে তথ্য না থাকার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। যা সরকারের অপদার্থতার পরিণাম বলেই দাবি বিরোধীদের।
লকডাউন পর্বে দেশের কত মেয়ে স্কুলছুট হল? কংগ্রেস সাংসদ মল্লিকার্জুন খাড়গের প্রশ্নের উত্তরে স্মৃতি ইরানি জানান, দেশের কত মেয়ে পড়াশোনা ছেড়ে দিল, এ বিষয়ে কোনও তথ্য রাখা সম্ভব হয়নি।
লকডাউনে কত সাফাইকর্মীর মৃত্যু হয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামদাস অটওয়ালে জানান, বিষয়টি পুরোটাই রাজ্যের এক্তিয়ারে পড়ে। তাই কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে কোনও তথ্য রাখেনি।
প্লাজমা ব্যাংকের বিষয়ে কেন্দ্রের কাছে কী তথ্য রয়েছে? কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী অশ্বিনী চৌবে এ বিষয়েও জানিয়েছেন, ‘প্লাজমা ব্যাংকের বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্যগুলি, তারাই করোনা আক্রান্তকে প্লাজমা দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। তাই কেন্দ্রের কাছে এ বিষয়ে কোনও তথ্য নেই।’
কত পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু? শ্রমমন্ত্রী বলেন, এ নিয়ে কোনও তথ্যই কেন্দ্রের কাছে নেই। ক্ষতিপূরণের প্রশ্নও ওঠে না। যা নিয়ে রীতিমতো সমালোচনার ঝড় ওঠে। শেষমেশ রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল শুধুমাত্র শ্রমিক স্পেশ্যালে পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যুর তথ্য দিয়ে জানান, ৯৭ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে ট্রেনে। কিন্তু গোটা লকডাউন পর্বে পথেঘাটে যে অগণিত শ্রমিক প্রাণ হারালেন, তাঁদের তথ্য রাখার দায়িত্ব কি কেন্দ্রের নয়? উঠছে প্রশ্ন।
পরিযায়ী শ্রমিকদের জেলা-ভিত্তিক সংখ্যা কত? এ বছর এপ্রিল মাসে মুখ্য শ্রম কমিশনার এক আরটিআই-এর আবেদনে জানা, পরিযায়ী শ্রমিকদের জেলা ভিত্তিক সংখ্যার কোনও রিপোর্টই নেই শ্রম মন্ত্রকের কাছে। যা থাকলে লকডাউনের সময় থেকে অত্যন্ত কার্যকরী হয়ে উঠতে পারত।
কত পরিযায়ী শ্রমিক কাজ হারালেন? কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গঙ্গওয়ার লোকসভায় দাঁড়িয়ে বলেন, লকডাউনের পর থেকে কত পরিযায়ী শ্রমিক কাজ হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন, তার কোনও তথ্য নেই সরকারের কাছে। এই উত্তর তিনি লিখিতভাবেই দিয়েছেন।
কত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বন্ধ হল? ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতাপ চন্দ্র সারঙ্গী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন এ বিষয়ে কোনও তথ্য নেই সরকারের কাছে।
অসংগঠিত ক্ষেত্রে শ্রমিক সংখ্যা কত? সংসদে সরকারকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, জানানো হয়েছে দেশের অসংগঠিত ক্ষেত্রে শ্রমিক সংখ্যার বিষয়ে তথ্য রাখছে সরকার। তবে তা কত, সে বিষয়ে কোনও তথ্যই দেওয়া হয়নি।
কত আরটিআই কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে? এ বিষয়ে প্রশ্ন করেছিলেন ডিএমকে নেতা কে. সমুগাসুন্দরম। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এই প্রশ্নের জবাবে সাফ বলেন, সরকারের কাছে এ বিষয়ে কোনও তথ্য নেই।
করোনায় কত পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়েছে? সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি রাজ্যসভায় বলেন, দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে কত পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়েছে, তা নিয়ে কোনও তথ্য নেই সরকারের কাছে। যাঁরা দিনরাত মানুষের সেবা করে চলেছেন এই কঠিন সময়ে, তাঁদের বিষয়ে কোনও তথ্য রাখার প্রয়োজনই মনে করেনি সরকার।
কত সংখ্যক রাজনৈতিক বন্দী জেলে রয়েছেন? সিপিআই সাংসদ বিনয় বিষ্মভের প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সাফ জানিয়ে দে…