বিল সম্পর্কিত তিনটি দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আজ থেকে রাজ্যসভার অধিবেশন বয়কটের ঘোষণা করেছেন বিরোধী নেতারা। মঙ্গলবার অধিবেশন শুরু হতেই বয়কটের ঘোষণা করেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ। এরপরই অধিবেশন কক্ষ থেকে একযোগে ওয়াকআউট করে কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধীরা। রাজ্যসভার পর এবার লোকসভাতেও বয়কট বিরোধীদের। এই বিষয়ে লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অন্য বিরোধী দলগুলির সঙ্গে আলোচনা করেছেন বলেও মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে জানান রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা তথা প্রধান জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন।
প্রসঙ্গত, বয়কটের জেরে রাজ্যসভা ফাঁকা থাকলেও, সংসদের নিম্নকক্ষে বিরোধী হই-হট্টগোল জারি ছিল। যার জেরে দুপুর ৩টের পর ১ ঘণ্টার জন্য লোকসভার অধিবেশন স্থগিত রাখা হয়। ৪টের সময় লোকসভার অধিবেশন শুরু হতেই ফের হই-হট্টগোল শুরু করে দেন বিরোধীরা। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘রাজ্যসভা ও লোকসভা যমজ ভাই। রাজ্যসভায় যা হয়েছে, লোকসভায় তার প্রভাব পড়বেই।’ তবে স্পিকার রাজ্যসভার বিষয় নিম্নকক্ষে আলোচনায় আপত্তি জানালে বিরোধীদের তরফে বয়কটের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী।
গতকালই সাসপেন্ড হওয়া ৮ সাংসদের মধ্যে ৬ জনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গে ডেরেক মঙ্গলবার বলেন, ‘আমাদের নেত্রী বহু দশক ধরে কৃষকের অধিকার নিয়ে আন্দোলন করে আসছেন। এই বিল কৃষক বিরোধী। নাগরিক বিরোধী। সংসদের ভিতরে ও বাইরে, আমরা এই লড়াইয়ের শেষ দেখে ছাড়ব।’ প্রসঙ্গত, বিরোধী ঐক্যের ডাক দিয়ে আজ এক দিনের অনশন পালন করছেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারও।
ডেরেক আরও জানান, কৃষি বিলের বিরোধিতায় আগামী পদক্ষেপ স্থির করতে বুধবার বেলা ১১টায় বৈঠকে বসছে কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধীরা। পাশাপাশি কৃষি বিলে সই না করতে আর্জি জানিয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে সময় চেয়েছে ১৭টি বিরোধী দল। যদিও রাইসিনা হিলসের তরফে এখনও কোনও বার্তা আসেনি। উল্লেখযোগ্য, মোট তিন দাবিতে সংসদের অধিবেশন বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিরোধীরা। দাবির অন্যতম, বেসরকারি সংস্থা কৃষকদের কাছ থেকে কৃষিপণ্য কিনলে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের কমে তা কেনা যাবে না, এম এস স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ মেনেই নির্ধারণ করতে হবে সহায়ক মূল্য এবং ফিরিয়ে নিতে হবে আট সাংসদের সাসপেনশন। সংসদের অধিবেশন শেষেও রাজনৈতিক ভাবে এই বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশে ইতোমধ্যেই বাংলায় শাসক দল যে কৃষি বিলের বিরোধিতা শুরু করেছে, তা মনে করিয়ে দেন ডেরেক ও’ব্রায়েন।