পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের প্রায় ১২,০০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন শিল্পপতি নীরব মোদী। সেই কাণ্ডে তোলপাড় হয়েছিল গোটা দেশ। জল গড়িয়েছিল রাজনৈতিক তরজা পর্যন্ত। কিন্তু তার পরেও যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি জালিয়াতি বিশেষ আটকাতে পারছে না, তা স্পষ্ট হল রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দেওয়া হিসেবে। তথ্যের অধিকার আইনে করা এক প্রশ্নের জবাবে শীর্ষ ব্যাঙ্ক আরবিআই জানিয়েছে, গত এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে ২৮৬৭টি জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে ১২টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে। যার মোট অঙ্ক ১৯,৯৬৪ কোটি টাকা।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দেওয়া এই তথ্য অনুসারে, এপ্রিল-জুনে সব চেয়ে বেশি জালিয়াতি হয়েছে স্টেট ব্যাঙ্কে, ২০২৫টি। সেই টাকার অঙ্ক প্রায় ২৩২৫.৮৮ কোটি। তবে আর্থিক হিসেবের নিরিখে সবচেয়ে বেশি চোট খেয়েছে ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। ৪৭টি জালিয়াতির ঘটনায় মার গিয়েছে ৫১২৪.৮৭ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, ব্যাঙ্কিং শিল্পের সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, বিভিন্ন শিল্পে ব্যবসা স্তিমিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঋণ বৃদ্ধির হারও কমেছে। আর করোনা সংক্রমণের সময়ে ব্যাঙ্কের লেনদেন-সহ ব্যবসায়িক কাজকর্মও গতি হারায়। কিন্তু রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হিসেব থেকে পরিষ্কার, জালিয়াতির বিরাম ছিল না সেই সময়েও।
এই প্রেক্ষিতে গত রবিবার রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে দেশের অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর জানিয়েছেন, তিন বছরে সিবিআই যত মামলা রুজু করেছে তার বড় অংশই ব্যাঙ্ক জালিয়াতির। ২০১৮ সাল থেকে তারা মোট ১৬৪৫টি তদন্ত হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে ৫১২টি ব্যাঙ্ক জালিয়াতির। ২৬৯টির মামলা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকে বলছেন, পিএনবি-সহ বিভিন্ন ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ঘটনা নিয়ে যতই তোলপাড় হোক না-কেন, কলসির ছিদ্র এখনও মেরামত করা যায়নি।