বিগত কয়েকমাস ধরে বাংলায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ লোকসভা ভোটের নিরিখে ও বিজেপি নেতাদের দাবি মানলে, তাঁদের অনুকূলেই দলবদল বেশি হওয়া উচিৎ ছিল। কিন্তু বাস্তবে ঘটছে ঠিক তার উল্টো। বিজেপির নেতা-কর্মী তো বটেই, বিধায়কও যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। এবার লোকসভায় শক্ত ঘাঁটি হয়ে ওঠা কোচবিহারেও ভাঙন ধরল গেরুয়া শিবিরে। আজ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন দলের বর্ষীয়াণ নেতা উৎপলকান্তি দেব ও বিজেপির তিন বারের পঞ্চায়েত সদস্য অনুপম দে। একইসঙ্গে সেই নেতার অনুগামীরাও আজ যোগ দিয়েছেন ঘাসফুল শিবিরে।
তবে, দলবদল করেই থেমে থাকেননি ওই দুই নেতা। বর্তমান বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে রীতিমতো বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন তিনি। তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ প্রতিদিনই তুলে থাকে বিজেপি শিবির। কিন্তু এবার দলবদল করে বর্তমান বিজেপি শিবিরকেই ‘তোলাবাজদের আখড়া’ বলে অভিহিত করলেন ওই দুই নেতা।
উৎপলকান্তি দেবের কথায়, “১৯৮৩ সাল থেকে বিজেপি করছি। কিন্তু সেই বিজেপি আর নেই। এখন দলের সব নেতাই তোলাবাজিতে ব্যস্ত। সাধারণ মানুষের উন্নয়ন নয়, এখনকার বিজেপি নেতাদের একটাই কাজ- তোলাবাজি। নেতৃত্বকে জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। তাঁরাও এখানে আসেন, আর নিজেদের ভাগ বুঝে চলে যান। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভুলভাল বকে যাওয়া ছাড়া আর তোলাবাজি করে যাওয়া ছাড়া আর কোনও কাজ নেই ওদের।” এরপরই তৃণমূলের দাবি, এই যোগদান এখন থেকে নিয়মিত চলবে। বাংলায় বিজেপির কফিনে পেরেক পুঁতবে কোচবিহার।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের একুশে জুলাই তৃণমূলের ‘শহীদ দিবস’-র ভার্চুয়াল সভা থেকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আহ্বান করেছিলেন, যাঁরা অন্য দল থেকে তৃণমূলে যোগ দিতে চান, তাঁদের সকলকে স্বাগত জানানো হবে দলে। সেই বার্তার পর থেকেই বিজেপিকে ক্রমশ দিশেহারা লাগছে। শুধু তাই নয়, ঘর গোছানোর পরিবর্তে প্রবল গোষ্ঠীকোন্দলেও ভুগছে রাজ্য বিজেপি। আর সেই সুযোগটাকেই ক্রমশ কাজে লাগাচ্ছে তৃণমূল শিবির। রাজনৈতিক মহলের মতে, শাসকদলের উল্টো চাপেই এখন খেই হারিয়েছে দিলীপ ঘোষরা। যা একুশের ভোটের আগে রক্তচাপ বাড়াচ্ছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের।