বাংলায় শাসন কায়েম করতে বিজেপির আইটি সেল বাঁকা পথ নিয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি এই অভিযোগ করে আসছে বহুদিন। এবার বিজেপির আইটি-সোশ্যাল মিডিয়া সেলের প্রাক্তন কর্মীরা আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনলেন। তাঁদের দাবি, বিজেপি দেশি-বিদেশি সংস্থা মাধ্যমে এই ধরনের পথকে আশ্রয় করে ভোটে জেতার পরিকল্পনা করে।
অভিযোগ ১ – বিজেপির আইটি সেল-সোশ্যাল মিডিয়া বাহিনী কিছু সংস্থাকে দিয়ে ভিডিও, অডিও ইনফোগ্রাফিক্স তৈরি করে। তারপর তা ফেসবুক-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটে পোস্ট করে দেয়। এরা ফেসবুকে নানা গ্রুপ পেজ তৈরি করে। এইসমস্ত গ্রুপের অনেকেরই ফেসবুক প্রোফাইল নকল। সত্য, মিথ্যা, অর্ধসত্য খবরও ছড়িয়ে দেওয়া হয় ওইসমস্ত গ্রুপের মাধ্যমে।
অভিযোগ ২ – বাংলার মতো বিজেপি বিরোধী রাজ্যে মানুষের দুর্দশার ছবি তুলে ধরা হয় ওইসব পেজগুলোতে। ওই পেশাদার সংস্থা কখনও কখনও পেশাদার শিল্পীদের দিয়ে অভিনয় করিয়েও ভিডিও শুট করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়। অনেক সময় ভিনরাজ্যের কোনও গোষ্ঠী সংঘর্ষের ছবি দেখিয়েও দাবি করা হয় বাংলার ঘটনা বলে।
ওইসব ছবি এবং ভিডিও দেখিয়ে বিজেপি প্রমাণ করতে চায় রাজ্যে হিন্দুরা বিপন্ন। মোদী জমানায় দেশ অগ্রগতির শীর্ষে পৌঁছেছে, আর অ-বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলির বেহাল দশা, এই ধারণা মানুষের মধ্যে গেঁথে দেওয়া এই ভিডিও এবং ছবি আর ফেক নিউজ ছড়ানোর আসল উদ্দেশ্য। যাতে ভোট এলে মানুষ বিজেপি ছাড়া অন্য কাউকে নিয়ে ভাবার অবকাশ না পায়, সেইজন্যই এসব করা হয়।
রাজ্যে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের লক্ষ্যে বিজেপি নানা কর্মকাণ্ড করে বলে অভিযোগ প্রাক্তন আইটি সেলের কর্মীদের। মানুষের মনে ভয়, সন্দেহ ও ঘৃণার বাতাবরণ তৈরি করা বিজেপির লক্ষ্য থাকে। সেজন্য সেরকম প্রচারও করা হয়। যেমন – মাত্র ১০ বছর পরেই বাংলায় মুসলমান মুখ্যমন্ত্রী ও ইসলামিক রাজ্যে পরিণত হবে বলে প্রচার করছে বিজেপির আইটি সেল।
বিজেপি সমীক্ষক সংস্থা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে জানতে চায় কোন এলাকায় কত পুরুষ, কত মহিলা, কত হিন্দু, কত মুসলমান, কত যুবকের সংখ্যা, কত বৃদ্ধ-বৃদ্ধা থাকেন। ফেসবুক পেজে সেইসব ভোটারদের কার্যকলাপ থেকে তাঁদের পছন্দ-অপছন্দ জেনে মানুষের মনস্তত্ত্ব বিশ্লেষণ করে প্রচার সামগ্রী প্রস্তুত করা হয়। যদিও এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি নেতৃত্ব।